বগুড়ার জিয়া মেডিকেলে অন্তঃসত্ত্বার পেটে ডাক্তারের লাথি, পুলিশের ওপর হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৭ এএম, ২২ আগস্ট,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০৯ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের চিকিৎসক ও ইন্টার্নি চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রোগী, রোগীর স্বজন ও পুলিশকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি দুইমাসের অন্তঃসত্বা নারীর পেটে লাথি মারার অভিযোগও উঠেছে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে।
আজ শনিবার রাত ৯ টার দিকে শজিমেক হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার হওয়া আছলাম বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার নন্দগ্রামের বাসিন্দা।
তিনি বলেন, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জয়নব বেগম গত বুধবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে একই দিন তাকে শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার রাতে তার স্ত্রীর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তিনি চিকিৎসকদের বিষয়টি জানান। কিন্তু তার কথা হাসপাতালের কোনো চিকিৎসকই আমলে নিচ্ছিলেন না। এদিকে তার স্ত্রীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তিনি আবারও চিকিৎসকদের কাছে ছুটে যান। এক পর্যায়ে চিকিৎসকের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এর জের ধরেই চিকিৎসকরা তাকে বেধড়ক মারধর করেন।
আছলাম বলেন, 'আমাকে চিকিৎসকরা কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। ওই সময় আমার ছোটভাই জাকির ছিল। তাকেও মারধর করেন চিকিৎসকরা। এক পর্যায়ে আমাকে একটি ঘরে আটকে রেখে বেধড়ক পিটিয়েছে হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ওরা (চিকিৎসক-ইন্টার্নি চিকিৎসক) ৫০ জনের মত ছিলেন।'
তিনি আরো বলেন, খবর পেয়ে আমার অসুস্থ স্ত্রী আমাকে বাঁচাতে ছুটে আসে। সে আসলে তার পেটে লাথি মারেন এক চিকিৎসক। অন্যরা তাকে (স্ত্রী) কিল-ঘুষি মারেন। এ সময় পুলিশ সদস্যদেরও মারধর করেছেন চিকিৎসকরা।'
মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই রাকিবুল ইসলাম বলেন, 'আমি খবর পেয়ে হাসপাতালে যাই। গিয়ে দেখি আছলাম ও তার স্ত্রীকে মারধর করা হচ্ছে। আমি তাদের বাঁচাতে গেলে চিকিৎসকরা আমাকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন। ওই সময় আমার সঙ্গে থাকা এটিএসআই আশরাফুল, কনস্টেবল শরীফ ও অরুপকেও মারধর করেন চিকিৎসকরা।'
জানতে চাইলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, 'আমার পুলিশ সদস্যদের মারধর করা করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জানতে চাইলে শজিমেক হাসপাতের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘চিকিৎসককের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের হট্টগোল হয়েছিল। ওই সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে তারাও হট্টগোলে জড়িয়ে পড়েন। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি, শুধু ধস্তাধস্তি হয়েছে। তিনি বলেন, 'অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটে লাথি মারার কোনো ঘটনা ঘটেনি।'
বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে চিকিৎসার জন্য বগুড়া ইসলামী হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার (নারী) স্বামীর ছোটভাই জাকির।