সীতাকুণ্ডে চোরাই কনটেইনার বিক্রিতে সক্রিয় সিন্ডিকেট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২২ পিএম, ১৫ আগস্ট,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:২৫ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি ডিপো থেকে ৪০টি কনটেইনার জব্দের ঘটনায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জব্দ করা কনটেইনারের মধ্যে ৬টিই চোরাই কনটেইনার বলে চিহ্নিত করেছে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের কর্মকর্তারা। অবৈধ ডিপো তৈরী করে বাহির থেকে চোরাই পথে কনটেইনারগুলো এনে তা কেটে অথবা রিপারিং করে উচ্চ দামে বাজারে বিক্রি করতো সেন্ডিকেটের সদস্যরা। তবে কনটেইনার জব্দ করা হলেও এ ঘটনায় জড়িত সেন্ডিকেটের কাউকে এখনো আটক করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় চেয়ারম্যানের দাবি অবৈধভাবে এই ব্যবসা করে কথিপয় ব্যক্তি আঙ্গুলফুলে কলা গাছ বনে গেছে। ডিপোর মধ্যে কাউকে ডুকতে দেওয়া হয়না। বৈধ ব্যবসা হলে এতো গোপনীয়তা কেন রাখা হয় বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে মন্তব্য তার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কয়েক বছর পূর্বে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারীর বানুরবাজার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত মেসার্স ফাইভ স্টার ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানে গড়ে তুলে মামুনর রশীদ ও আনিস নামে দুই ব্যক্তি। ডিপোর মালিক মামুনর রশীদ ও আনিছ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে চোরাই পথে কনটেইনারগুলো সংগ্রহ করে। পরে ডিপোতে এনে তা কেটে বা রিপারিং করে একটি কনটেইনার ১ থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে। এরকম আরো কয়েকটি ডিপো রয়েছে উপজেলার বিভিন্নস্থানে। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের দাবি এই সকল ডিপোর কোন বৈধতা নেই।
এইরকম একটি অভিযোগের তদন্ত নামে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের কেন্দ্রীয় একটি টিম। গত বুধবার বানুর বাজারস্থ মেসার্স ফাইভ স্টার ট্রেডিং নামে একটি ডিপোতে অভিযান চালিয়ে চোরাই ৬টি কনটেইনারসহ ৪০টি কনটেইনার জব্দ করেন তারা। এ সময় ফৌজদারহাট সার্কেলের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয় ফৌজদারহাট অঞ্চলের সিনিয়র কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, রহিম বক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ৬টি কনটেইনার চুরি ঘটনা ঘটে গত বছর। ফাইভ স্টার ট্রেডিং এর ডিপোতে অভিযান চালিয়ে ওই ৬টি কনটেইনারসহ ৪০টি অবৈধ কনটেইনার জব্দ করা হয়। এরকম আরো কয়েকটি অবৈধ ডিপো রয়েছে উপজেলার বিভিন্নস্থানে।
তিনি আরও বলেন, অভিযান চলাকালে তারা পার্সেসের কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেন নাই। কনটেইনারগুলো বিক্রি, কাটতে বা রিপারিং করতে হলে সরকারি অনুমোদন লাগে সেটিও তাদের নেই। কনটেইনারগুলো বন্ড সুবিধায় বাংলাদেশে আসে বলে জানান তিনি।
ডিপোর কর্মকর্তা শওকত হোসেন ৪০টি কনটেইনার জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তারা ডিপোতে এসে কোনো পরিচয় না দিয়ে ফাইল কেভিনেট ভাংচুর করে অফিসের ফাইলপত্র নিয়ে নেয়। পরে জব্দ করা কনটেইনারগুলো মার্ক করে রেখে যায়।
মেসার্স ফাইভ স্টার ট্রেডিংয়ের মালিক মোহাম্মদ মামুনর রশীদ বলেন, কনটেইনারগুলো আমরা স্ক্র্যাপ হিসাবে কিনে নিয়েছি। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের ডকুমেন্ট দিয়েছি। তবে কনটেইনার ডিপো পরিচালনার তাদের কোনো বৈধতা নেই। বিষয়টি নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন বলেন, তারা অবৈধভাবে ব্যবসা করছে। তাদের কাছে ইউনিয়ন পরিষদের কোনো ট্রেড লাইসেন্সও নেই।