সুনামগঞ্জে যৌতুকের জন্য হাত-পা বেঁধে গৃহবধুকে নদীতে নিক্ষেপ, পরে উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪১ পিএম, ৩১ জুলাই,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:০৫ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
সুনামগঞ্জে যৌতুকের জন্য এক গৃহবধুর হাত-পা ও মুখ বেঁধে নদীতে ফেলে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এঘটনার খবর পেয়ে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় নদী থেকে ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নির্যাতিত ওই গৃহবধুর নাম মাইফুল বেগম (২৩)। তিনি জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদলারপাড় গ্রামের কারী নিজাম উদ্দিনের মেয়ে।
আজ শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল ৯টায় নির্যাতিত গৃহবধু মাইফুল বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আর এই ঘটনাটি ঘঠেছে গতকাল শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাতে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রায় ৮মাস আগে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদুল ইসলামের ছেলে আবু তাহের (২৮) এর সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় মাইফুল বেগমের। কিন্তু বিয়ের পর স্বামী আবু তাহের তার নিজ বাড়ি রেখে স্ত্রী মাইফুল বেগমকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি তাহিরপুর উপজেলার বাদলারপাড় গ্রাম সংলগ্ন ভোলাখালি গ্রামে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
বিয়ের ২মাস যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য স্ত্রী মাইফুল বেগমকে স্বামী আবু তাহের নির্যাতিন শুরু করে। তার নির্যাতন সইতে না পেরে অসহায় গৃহবধু মাইফুল বেগম তার দরিদ্র বাবার কাছ থেকে একবার ৫০হাজার টাকা এনে দেন। তারপরও ক্ষান্ত হয়নি সেই লোভী পাষন্ড স্বামী আবু তাহের। তার চাহিদা দিনদিন বাড়তে থাকে। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে গৃহবধু মাইফুল বেগম তার বাবার বাড়িতে চলে আসে।
এমতাবস্থায় গতকাল শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাত অনুমান ১০টায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গৃহবধু মাইফুল বেগম ঘরের বাড়িরে যাওয়ার পর পূর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা যৌতুক লোভী পাষন্ড স্বামী আবু তাহের তার ভাই জাকির হোসেন (২৫) ও বাবুল হোসেন (২২) মিলে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ওই গৃহবধুর হাত-পা ও মুখ বেঁধে পার্শবর্তী ভাংগারখাল নদীতে নিয়ে ফেলে দেয়।
এসময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখতে পেয়ে থানায় জানালে পুলিশ এসে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় নদী থেকে গৃহবধু মাইফুল বেগমকে উদ্ধার করে।
এব্যাপারে ওই গৃহবধুর অসহায় বাবা কারী নিজাম উদ্দিন বলেন- যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে এভাবে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হবে আমি কোনদিনও ভাবিনি। আমি আমার মেয়ের নির্যাতনের বিচার চাই।
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার সাংবাদিকদের বলেন- নির্যাতিত গৃহবধুর বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।