পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীর হাত-পা ভেঙে দিলেন স্বামী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ২৭ জুলাই,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৩০ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
কক্সবাজারের চকরিয়ায় যৌতুক ও পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় এক গৃহবধূকে শ্বশুরবাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেও হামলা চালিয়েছেন তার স্বামী।
গতকাল সোমবার (২৬ জুলাই) এ ঘটনায় চকরিয়ায় থানায় মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর নাম রোকেয়া সুলতানা মেরী (২২)। তিনি উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপাড়ার নুরুল হকের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ১৮ জুলাই থেকে মেরীকে নির্যাতন করে হাত-পা থেতলে ও ভেঙে দিয়ে বাড়িতে আটকে রাখেন তার স্বামী নুরুল হক ও শাশুড়ি রশিদা বেগম। কাঠের তক্তা দিয়ে পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়া হয়। মারধরের সময় চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। তারা গৃহবধূ মেরীর বাপের বাড়িতে খবর দেন। পরে তার ভাই সাদেকুর রহমান স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল রোববার নুরুল হকের বাড়ি থেকে মেরীকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এরপর রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালে ঢুকে পাঁচ-ছয়জনকে নিয়ে নুরুল হক আবারও তার স্ত্রীর ওপর হামলা চালান। এ সময় গৃহবধূ মেরী, তার ভাই ও বোনসহ কয়েকজন আহত হন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি চকরিয়া থানা পুলিশকে তাৎক্ষণিকভাবে জানালে থানার উপপরিদর্শক আবু সায়েম ও উপপরিদর্শক মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হাসপাতালে উপস্থিত হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
জানা যায়, খুটাখালী ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড উত্তর ফুলছড়ি গ্রামের আবু তালেবের মেয়ে রোকেয়া সুলতানা মেরীর বিয়ে হয় চার বছর আগে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে স্বামী নুরুল হক এবং শাশুড়ি রশিদা বেগম যৌতুক দাবি করে মারধর করতেন। এ ছাড়া ছয় মাস আগে নুরুল হক বিদেশ থেকে ফিরে এসে তার ভাবীর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হন।
এ ঘটনা স্ত্রী মেরী জানার পর স্বামীকে বাঁধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিনিয়ত তাকে মারধর করেন নুরুল হক। এ ছাড়া যৌতুকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নুরুল হককে ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছেন বলেও গৃহবধূর বড় ভাই বশির আহমদ জানান।
নির্যাতন ও হামলার ঘটনায় আজ সোমবার সকালে চকরিয়ায় থানায় বশির আহমদ বাদী হয়ে নুরুল হকসহ দুই জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জুয়েল ইসলাম জানান, ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত এজাহার পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।