পাটুরিয়ায় যাত্রী ও যানবাহনের তীব্র চাপ, ঘাটে ভয়াবহ যানজট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২৯ পিএম, ২০ জুলাই,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১০ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
ঈদে ঘরমুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ভয়াবহ যানজট দেখা দিয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানিকগঞ্জের বানিয়াজুরী থেকে টেপড়া এলাকা পর্যন্ত ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। এদিকে ভোর থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এসব কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো যাত্রী।
সকাল থেকে পাটুরিয়া লঞ্চঘাটেও যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ পড়ে। লঞ্চে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহনের নির্দেশনা থাকলেও যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে ফেরি ও লঞ্চে ওঠে পড়েন।
ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকেরা জানান, গতকাল সোমবার দুপুরের পর থেকে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা ঈদে বাড়ি ফিরতে শুরু করেন। এদিন বিকেলের পর থেকে পাটুরিয়ায় যাত্রীর চাপ বেড়ে যায়। এ ছাড়া ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও যানবাহনের চাপ বেড়ে। এর প্রভাব পড়ে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায়ও।
পুলিশের সদস্যরা মহাসড়ক ও পাটুরিয়া ঘাটের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দায়িত্ব পালন করায় গতকাল সন্ধ্যার পর চাপ কিছুটা কমে এলেও আজ সকাল থেকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় এবং ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন ছোট গাড়ির চাপও পড়েছে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায়। আজ বেলা ১১টার দিকে যাত্রীবাহী বাসগুলো ঘাট এলাকা ছেড়ে উথলী-পাটুরিয়া সংযোগ সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ সারিতে আটকা পড়েছে। পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাট থেকে নালী-টেপড়া সড়কের আমডালা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে ব্যক্তিগত বিভিন্ন গাড়ি আটকা পড়েছে। এসব যানবাহনের যাত্রীদের দীর্ঘ সময় নদী পারাপারের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগী কয়েকজন যাত্রী বলেন, ঢাকার গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছাতে স্বাভাবিক সময়ে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লাগে। বর্তমানে সেখানে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগছে। এ ছাড়া পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় এসে তিন থেকে চার ঘণ্টা করে যাত্রীবাহী বাসগুলোকে আটকে থাকতে হচ্ছে।
ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকাল বাসে করে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীরা পাটুরিয়া পুরোনো টার্মিনাল এলাকায় নামছেন। আসছেন। এরপর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজেই তাঁরা প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে ফেরি ও লঞ্চঘাটে পৌঁছাচ্ছেন।
এদিকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের যাত্রীর চাপ বেড়েছে। এসব বাসের যাত্রীদের দুই থেকে তিন ঘণ্টা করে ঘাটে আটকে থাকতে হচ্ছে। কোনো যাত্রী বাস থেকে নেমে ফেরিতে গিয়ে ওঠেন। এসব যাত্রীর অধিকাংশই পোশাক কারখানা ও নিম্ন আয়ের মানুষ। লঞ্চঘাটেও যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে কোনো কোনো লঞ্চে অর্ধেকের বেশি যাত্রী বহন করা হচ্ছে। ফেরিতেও গাদাগাদি করে যাত্রীদের নদী পার হতে দেখা গেছে। ঘাট এলাকায় পুলিশ সদস্যরা চেষ্টা করেও যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে পারছেন না। যাত্রীরা আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাউদ্দিন বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১৬টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। আজ যাত্রী ও যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ পড়েছে। তবে দুপুরের পর এই পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।