বর্ষার শুরুতেই পদ্মায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর পয়েন্টে তীব্র ভাঙন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৫ পিএম, ৩ জুলাই,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৫৫ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েকদিনে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডের কয়েকশ একর আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি নদী রক্ষা বাধ, ভারত থেকে আসা বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনের খুটিসহ অসংখ্য স্থাপনা। এভাবে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে বিলীন হয়ে যাবে মরিচা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম।
স্থানীয়রা জানায়, এ বছর বন্যার পানি গত বছরের মত বৃদ্ধি না পেলেও পানি নামার সাথে সাথে পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। মরিচা ইউনিয়নের ভুরকা-হাটখোলা থেকে কোলদিয়াড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, বাগানসহ অনেক স্থাপনা। চার ফসলি জমি হারিয়ে অনেকেই নি:স্ব হয়ে পড়েছেন। গত কয়েক দিনে কয়েকশ একর ফসলি জমি নদীর পেটে চলে গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভাঙনের ফলে নদী থেকে মাত্র ৫শ ফুট দূরে রয়েছে ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে যে কোন সময় সঞ্চালন লাইনের খাম্বা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ, নদী ভরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভুরকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় কান্দিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাটখোলাপাড়া জামে মসজিদ, জুনিয়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জুনিয়াদহ বাজার। এছাড়াও ভুরকা, কোলদিয়াড়, জুনিয়াদহ, কোলদিয়াড় পূর্বপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের মাঝে ঘরবাড়ি হারানোর আতংক বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু হোসেন জানান, প্রতিবছর নদী ভাঙলেও এবার এর তীব্রতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ধান-আখ ক্ষেত, বাগানসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।
মরিচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, পদ্মার ভাঙনে তার ইউনিয়নের অনেকে নি:স্ব হয়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে বসতবাড়িসহ বহু স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। নদী ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেন তিনি। এ দিকে নদী ভাঙনের তীব্রতা নিরূপণ ও নদী ভাঙন রোধকল্পে পরিকল্পনা করতে নদীর ভাঙন কবলিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফছার উদ্দিন।
পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, পরিস্থিতি বেশ ভয়াবহ। ভাঙন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পরিদর্শনকালে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
দৌলতপুর আসনের সাংসদ অ্যাড. আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ বলেন, ভাঙন রোধে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক নদী ভাঙন রুখতে নদীপাড়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে সিমেন্টের ব্লক নির্মাণ করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।