ছেলের বউয়ের মামলার ভয়ে বাড়ি ছাড়া পিতার সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৭ এএম, ২৩ জুন,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:০৩ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের নিজ পুত্র আর পুত্রবধুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিকার চেয়েছেন ৯০ বছরের এক বৃদ্ধ পিতা। পুত্রবধুর হেনস্তার শিকার হয় হাসপতালে ভর্তি হয়ে উল্টো পুত্রবধুর দায়েরকৃত মামলায় ফেরারি হয়ে আছেন বৃদ্ধ মো. আব্দুল লতিফ ও তাঁর সন্তানেরা।
এলাকায় থানা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ একাধিক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়েছেন সালিশকারীরা।
ঘটনাটি শিকার বৃদ্ধ মো. আব্দুল লতিফ উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের চান্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর ৪ পুত্র রয়েছেন। এরমধ্যে সবার বড় মো. আব্দুল মোতালেব বিজিবির সুবেদার। বড় ছেলে সুবেদার মো. আব্দুল মোতালেব ও তার স্ত্রী ছালেমা বেগমের অত্যাচার নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধ মো. আব্দুল লতিফ জানান, উনার ৩৬ শতক সম্পত্তি ৪ ছেলেকে সমানভাগে বন্টন করে দেন। কিন্তু উনার বড় ছেলে বিজিবিতে কর্মরত মো. আব্দুল মোতালেব গত ০৬ এবং ২১ মার্চ বাড়িতে ছুটিতে এসে তার স্ত্রী ছালেমা বেগমকে নিয়ে ৩য় ছেলে মো. আব্দুল হান্নানের বসতঘর সংলগ্ন কিছু জায়গা জোরপূর্বক দখল করে নেয়। এঘটনায় টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নিকট আমার ছেলে লিখিত অভিযোগ করেন। গত ১২ মার্চ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন। বিষয়টি বানচাল করতে সুবেদার মো. আব্দুল মতলিব ও তার স্ত্রী ছালেমা বেগম বাড়িতে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। গত ০৩ এপ্রিল কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষন রায়ের নির্দেশে বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন। কিন্তু সুবেদার মো. আব্দুল মোতালেব নিষ্পত্তিকালে বাড়িতে না আসায় বিষয়টি নিষ্পত্তি হচ্ছে না।
বৃদ্ধ আব্দুল লতিফ আরও অভিযোগ করেন গত ১৯ জুন বিকেলে পুত্রবধু ছালেমা বেগম তাকে মারপিট করেন। তার ছেলেরা তাকে উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। সোমবার ২১জুন এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে আমার পুত্রবধু আমাকে ও আমার ছেলেদের ওপর মিথ্যা অভিযোগ এনে ওই দিন উল্টো থানায় একটি হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেন। আমরা এখন ফেরারী হয়ে ঘরবাড়ি ছাড়া আছি। এরকম হয়রানী থেকে আমরা পরিত্রান চাই।
তিনি আরও জানান, আমার সম্পত্তির অংশীদার সব সন্তান সমানভাবে পাবে। বড় ছেলে ও তাঁর স্ত্রী আমার সম্পত্তির অংশ এককভাবে তাদের নামে করে নিতে আগে থেকে বিভিন্ন অপকৌশল চালিয়ে আমার কাছ থেকে লিখে নেয়। বিষয়টি আমি ও বাকি সন্তানরা যখন বুঝতে পারি তখন সে ও তাঁর স্ত্রী উল্টো আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিলো। তাঁদের হয়রানী থেকে পরিত্রাণ পেতে গত মাস দেড়েক আগে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিজিবির মহাপরিচালক বরাবরে দুটি পৃথক আবেদন পাঠায়েছি।
এ ব্যাপারে সুবেদার আব্দুল মোতালেব’র সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, মিটিংয়ে আছি পরে কথা বলব। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুত্রবধু ছালেমা বেগমের সাথে যোগাযোগ করলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, আমি এখন কথা বলতে পারব না, ওরা আমাকে অনেক মারধর করেছে আমি হসপিটালে ছিলাম। এখন আসছি, আমি এখন কথা বলতে পারব না। সুস্থ হলে কথা বলব।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভুষণ রায় জানান, দুই পক্ষ অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত স্বাপেক্ষে তাঁদের অভিযোগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।