ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের হামলা মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্যতম অপরাধ - বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৩ এএম, ১৭ মে,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৪৪ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মুসলমানদের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইবাদতস্থল আল আকসা মসজিদসহ ফিলিস্তিনি বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান থেকে ইসরাইলি বোমা হামলায় অসংখ্য ফিলিস্তিনি হতাহত, আল জাজিরা ও এপির ব্যুরো কার্যালয়সহ অগণিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ ফিলিস্তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসের বর্বরতম ও অমানবিক ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি।
আজ রবিবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আমি মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল আকসা মসজিদসহ গাজা এবং অন্যান্য এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ ব্যাপক বোমা হামলা ও নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নিহতদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
তিনি বলেন, ইসরাইলের এই বর্বরোচিত হামলা বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানের অনুভূতিতে চরম আঘাত হেনেছে। শুধু মুসলমান নয়, মানবিক বিবেকসম্পন্ন যেকোন ধর্মের মানুষের মনে এই অমানবিক হামলা তাদের হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। এই হামলা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ফিলিস্তিনিদের এই দুঃসময়ে তাদের বেদনার্ত জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিও সমব্যথী ও ক্ষুব্ধ। বিশ্বব্যাপী চলমান অতিমারী করোনার এই কঠিন সময়ে পবিত্র রমজানে শবে কদর, জুমাতুল বিদা ও পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনসহ এখনও ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের ন্যক্কারজনক ও নৃশংস হামলা মানবতার বিরুদ্ধে এক জঘন্যতম অপরাধ। এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী চলমান বর্বরতার আরেকটি ঘৃণ্যতম উদাহরণ হয়ে থাকবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইসরাইলের সর্বগ্রাসী এই হামলায় ফিলিস্তিন আজ এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। শরণার্থী শিবির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আল জাজিরা, এপিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কার্যালয়- কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না এই সর্বগ্রাসী হামলার ছোবল থেকে। রকেট হামলার মাধ্যমে গণমাধ্যমের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ইসরাইলি সেনাদের নৃশংস হামলার সংবাদ যেন বিশ্ববাসী অবগত হতে না পারে। ইসরাইলি বাহিনী স্থল ও আকাশ পথে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে নারী-শিশু, কিশোর-যুবক, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নির্বিচারে নির্মমভাবে হত্যা করছে। এমন বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসী স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ। এই শোকাবহ ঘটনার সময়ে বাংলাদেশের জনগণ এবং বিএনপি ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করছে।
তিনি বলেন, বিএনপি ও বাংলাদেশের জনগণ প্রথম থেকেই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সমর্থন দিয়ে আসছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের আমলে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সবসময় সোচ্চার ছিলেন এবং এখনও বিএনপি সেই নীতিতে অটল আছে। ইসরাইলি বাহিনীর এই অমানবিক হামলা ও হত্যাযজ্ঞ ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। আমরা মনে করি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকার ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য ও জন্মগত অধিকার। তাদের এই অধিকার হরণের ধৃষ্টতা কোনভাবেই সহ্য করবে না বিবেকবান মানুষ ও বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়। এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর ইস্পাতকঠিন ঐক্য এখন সময়ের দাবি। ঐক্যবদ্ধ মুসলিম উম্মাহকে আন্তর্জাতিক ফোরামে এক ও অভিন্ন ভাষায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলিদের হামলার বিরুদ্ধে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।
মির্জা আলমগীর বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা, হত্যা, নির্যাতন এবং তাদের জমি ও বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদসহ বিভিন্ন স্থাপনা দখল ইসরাইলিদের নিয়মিত কর্মে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এই হামলার নিন্দা জানালেও তা যথেষ্ট নয় বলে বিএনপি মনে করে। ইসরাইলকে এ ধরনের হামলা, নৃশংসতা ও উস্কানিমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত রাখাসহ ঘৃণ্য ও বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে এবং ইসরাইলের দখলদারিত্ব থেকে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বাস্তবসম্মত স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা জাতিসংঘ, ওআইসি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোর আহবান জানাচ্ছি। বিএনপি ইসরাইলিদের কর্তৃক বোমা হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তাদের শোকাহত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন ও আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছে।