করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিএনপি নেতা খন্দকার আহাদের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩১ এএম, ২২ মার্চ,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৫৬ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপির পররাষ্ট্র বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য খন্দকার আহাদ আর নেই। করোনায় আক্রান্ত হয়ে খন্দকার আহাদ রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টা ১৫ মিনিটে মারা গেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা খন্দকার আহাদ আহমদ নব্বইয়ের এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তার বাবা খন্দকার আজিজুর রহমান ছিলেন গাইবান্ধা সদর পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান। খন্দকার আহাদ আহমেদ গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি গবেষণাধর্মী সংস্থা ‘জি নাইন’-এরও সদস্য ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শোক
বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য, গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা খন্দকার আহাদ আহমেদ গতরাতে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তিনি কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১০ দিন যাবত ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। খন্দকার আহাদ আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ এক শোকবার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “মরহুম খন্দকার আহাদ আহমেদ একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ছিলেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণে তার দক্ষতা ছিল প্রশংসনীয়। জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বিকাশ ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অঙ্গীকারাবদ্ধ। নিজ এলাকায় একজন জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ হিসেবে অত্যন্ত সুপরিচিত ছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের নীতি ও আদর্শে গভীরভাবে আস্থাশীল এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শনে বিশ্বাসী মরহুম খন্দকার আহাদ আহমেদ গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিকট ছিলেন অত্যন্ত সমাদৃত। নিজ এলাকায় বিএনপিকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে তিনি নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করে গেছেন। জনসেবার মহান ব্রত নিয়ে রাজনীতি করতেন বলেই এলাকায় তিনি ছিলেন একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি ছিলেন অত্যন্ত উদার, সজ্জন ও বিনয়ী স্বভাবের মানুষ। দলীয় আদর্শ ও গণতান্ত্রিক চেতনাকে দৃঢ়ভাবে বুকে ধারণ করে মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার সপক্ষে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার মতো আদর্শনিষ্ঠ রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে ব্যথিত হয়েছি।
আমি মরহুম খন্দকার আহাদ আহমেদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকার্ত পরিবারবর্গ, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শোক
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা খন্দকার আহাদ আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও শহীদ জিয়ার নীতি ও আদর্শই ছিল মরহুম খন্দকার আহাদ আহমেদের রাজনৈতিক জীবনের পথচলা। গণতন্ত্রের প্রতি ছিল তার গভীর আস্থা এবং দলীয় আদর্শের প্রতি ছিল অগাধ বিশ্বাস। বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে তার বলিষ্ঠ অংশগ্রহণ ছিল নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন একজন দক্ষ বিশ্লেষক। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি ছিলেন একজন নেতৃস্থানীয় সংগঠক। ২০০৯ সালে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বিএনপিতে যোগ দিয়ে আমৃত্যু দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। বিনয়ী ও সদালাপি মরহুম খন্দকার আহাদ আহমেদ দলীয় নেতাকর্মী ও এলাকার মানুষের নিকট ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়ভাজন। তার মতো আদর্শবান রাজনীতিকের মৃত্যুতে আমি যারপর নাই ব্যথিত হয়েছি। তার মৃত্যুতে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির যে ক্ষতি হলো তা সহজে পূরণ হবার নয়। আমি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবর্গ, আত্মীয়স্বজন এবং শুভাকাক্সক্ষীদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।
খন্দকার আহাদ আহমেদের দাফন সম্পন্ন : আজ বাদ জোহর ধানমন্ডি ঈদগাহ মসজিদ মাঠে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, জুনায়েদ সাকি, শেখ রবিউল, ডাক্তার সাখাওয়াত সায়ন্ত, অ্যাডভোকেট মহসিন হোসেন ও আহাদ আহমেদের ভাই প্রিন্স আহমেদ প্রমুখ। নামাজে জানাজা শেষে লাশ গাইবান্ধায় নিয়ে যাওয়া হয়। গাইবান্ধা ইসলামী হাইস্কুল মাঠে এশার নামাজের পর জানাজা শেষে পৌরসভা করব স্থানে বাবার করবের পাশে দাফন করা হয়।