ঐক্য করতে গিয়ে বাকশাল করে ফেললে কাজ হবে না : ড. মঈন খান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:২১ পিএম, ৫ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ০১:০৭ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থাকে নির্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, ঐক্য করতে গিয়ে নতুন করে বাকশাল করে ফেললে কাজ হবে না। স্বৈরাচার পালালেও দেশে গণতন্ত্র পুরোপুরি ফিরে আসেনি। এসময় প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিএনপির এ সিনিয়র নেতা।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশের নদী-পানির অধিকার আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির নেতা আতিকুর রহমান সালুর স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মঈন খান বলেন, ভারত-বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব মেনে নিতে পারে না সে দেশের রাজনীতিক, নীতিনির্ধারক ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা। দুটি রাষ্ট্রের বন্ধুত্ব হবে দু’দেশের মানুষের মধ্যে, কেবলমাত্র দুটি দেশের সরকারের মধ্যে নয়।
জাতীয় ঐক্য গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের বৈঠক প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ঐক্য অবশ্যই প্রয়োজন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে। এতে কারও কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না। কিন্তু সতর্ক করে দিতে চাই, ইংরেজিতে একটি কথা আছে, ইউনিটি ইন ডাইভারসিটি। আমরা ঐক্য করতে গিয়ে যদি আবার বাকশাল করে ফেলি তাহলে কিন্তু সেই ঐক্যে কাজ হবে না। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ডেমোক্রেসি মুখে বলা সহজ, কিন্তু বাস্তবে রূপ দেয়া এতো সহজ না।
ড. মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মনস্তাত্তি¡ক যে অবস্থান, স্বাধীনতার যে আবেদন-আকাঙ্ক্ষা, কথা বলার যে ইচ্ছে, ভোট দেয়ার যে প্রচেষ্টা; আমি কিন্তু ব্যবসায়ী বা রাজনৈতিক নেতাদের কথা বলছি না, আমি বলছি হাটে মাঠে ঘাটে, ফসলের ক্ষেতের মানুষ, রিকশাচালক ও গার্মেন্টস কর্মীদের কথা। তাদের আকাক্সক্ষা কিন্তু অর্থ, বিত্ত, বৈভব বা ক্ষমতা নয়। তাদের আকাক্সক্ষা পাঁচ বছর পর পর একটি ভোট দিতে পারা। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের কথা আপনারা বলেন, কোথায় নতুন প্রজন্ম? বিগত ১৫-২০ বছর বা দুই দশক ধরে আমাদের নতুন প্রজন্মের কেউ ভোট দিতে পেরেছে? পারেনি তো। তৃণমূলের মানুষ যারা ঠিকমতো খেতে পায় না, খাবারের জন্য অনেক কষ্ট করে, তারাও বলবে- আমি অর্থ-বিত্ত চাই না, আমি ভোটের অধিকার চাই। এটিই হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা। ‘দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা সেই সত্যে বিশ্বাস না করে অর্থ, বিত্ত, বৈভব, ক্ষমতা, পজিশন, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এগুলো হতে চাই’- এ প্রসঙ্গে বলেন ড. মঈন খান।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, আজকে সংস্কারের কথা বলছেন। খুব ভালো কথা। সংস্কার তো লাগবেই। কিছু মনে করবেন না, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দেই, আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত না নিজেরা নিজেদের সংস্কার করবো ততক্ষণ কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না। স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, আইএফসি সভাপতি অধ্যাপক জসীম উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান, সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার, সহ-সভাপতি ড. নাজমা আহমেদ, সাবেক এমপি জহিরুদ্দিন স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহŸায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এফ কে মো. এমদাদ খান, বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভ‚ঁইয়া প্রমুখ।