পক্ষপাতদূষ্ট নির্বাচন কমিশনারের অধীনে বিএনপি কখনোই নির্বাচনে যাবে না : প্রিন্স
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪৯ পিএম, ২৫ আগস্ট,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৪১ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, নিশি রাতের অবৈধ এ সরকারের ক্ষমতায় আসার শেষ অস্ত্র ইভিএম এর ব্যবহার ও পক্ষপাতদূষ্ট নির্বাচন কমিশনারের অধীনে বিএনপি কখনোই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। সরকার কৃচ্ছতা সাধনের কথা বললেও দুর্নীতি ও লুটপাট করতেই নতুন করে আরও ইভিএম মেশিন ক্রয় করছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ইভিএম কিনতে খরচ পড়ে ২৩ হাজার টাকা আর বাংলাদেশে কেনা হচ্ছে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকায়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর পৌর শহরের নিউ মার্কেট এলাকার একটি হোটেলের মিলনায়তনে শেরপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. মাহমুদুল হক রুবেল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ্ ওয়ারেছ আলী মামুন ও মো. শরিফুল আলম। আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী, সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মান্নান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম মাসুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্রামুজ্জামান রাহাত, শহর বিএনপির সভাপতি প্রভাষক এ. বি. এম মামুনুর রশিদ পলাশ, সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান রূপন প্রমুখ।
প্রধান অতিথি সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ভোটের অধিকার হরণকারী অবৈধ এ আওয়ামী লীগ সরকার আজ উন্নয়নের কথা বলছে অথচ জ্বালানী তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। জনগণের হাঁসফাঁস অবস্থা শুরু হয়ে গেছে। জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে কৃষক ক্ষেতে পানি দিতে পারছে না। ফসল উৎপাদনে অনিশ্চয়তা আর বেশি খরচ করে উৎপাদিত পণ্যের দাম পাবে কিনা এ নিয়ে উৎকন্ঠায় দিন কাটছে কৃষকের।
তিনি বলেন, আপাদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত এ সরকার সারাদেশে ভয়াবহ লোডশেডিং এর মাধ্যমে জনগণের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়ে চরম ও দুর্বিসহ ভোগান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই সরকারের গ্রহণযোগ্যতা, বিশ্বাসযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা আজকে তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। গুম, খুন করে কর্তৃত্ববাদী শাসন চালাচ্ছে। তাঁদের মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে তাঁদের ওপর আর্ন্তজাতিকভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে। বিএনপি জনগণের দল। বিএনপি কখনো নিষেধাজ্ঞা চায় না। কারণ এ নিষেধাজ্ঞা একটি দেশের জন্য ক্ষতিকর। নিষেধাজ্ঞা থেকে বাঁচতে অবশ্যই তাঁদের বিশেষ বাহিনীর গুম, খুন সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, নতুন করে শোনা যাচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে একটি গোয়েন্দা সংস্থার ‘আয়নাঘরে’ বন্দী করে রাখা হচ্ছে। সারা বাংলাদেশকেই তারা ‘আয়নাঘর’ বানিয়ে রেখেছে।
প্রধান অতিথি বলেন, গণতন্ত্র হরণকারী এ সরকার আজ বাঘের পিঠে উঠে বসেছে কিন্তু নামার পথ খুঁজে পাচ্ছে না। এই সরকার সস্তায় ডলারের খোঁজে নেমেছে কিন্তু তাঁদের আইএমএফসহ কেউ বিশ্বাস করছেনা।
তিনি বলেন, আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে সারা বাংলাদেশে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সাধারণ জনগণও আমাদের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করা শুরু করেছে।তাই আমাদের এ আন্দোলনকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণ আজ ফুঁসে উঠছে, তাই দিন বেশি দূরে নয়, জনগণকে সাথে নিয়ে খুব শীঘ্রই এক দফার আন্দোলনে বিএনপি রাজপথে সক্রিয় হয়ে উঠবে। এমরান সালেহ প্রিন্স দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সকল ভেদাভেদ ভুলে ইস্পাত কঠিন ঐক্যবদ্ধতার মাধ্যমে চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য তৈরী থাকতে হবে।
জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক রুবেল তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিএনপি জনগণের দল, জনগণের জন্য কাজ করে। তাই জনগণের লুন্ঠিত সকল অধিকার ফিরিয়ে দিতে এ অবৈধ লুটেরা সরকার পতনের কোন বিকল্প নেই। চূড়ান্ত আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে আমাদের সবাইকে বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে সদা সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। আন্দোলনের ডাক এলেই যাতে আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পাড়ি।
বর্ধিত সভায় জেলার পাঁচটি উপজেলার সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।