এ সরকার যদি বেশিদিন ক্ষমতায় থাকে দেশটাকে হায় হায় দেশ বানিয়ে ছাড়বে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০১ পিএম, ৩১ জুলাই,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৫১ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, শ্রীলঙ্কার সরকার রাতের আঁধারে পালিয়েছে। আমাদের দেশের সরকারি দল কিভাবে পালাবেন? আমরা চাই এই সরকার শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় হোক। তারা বলে এখন তো তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই; আদালত বাতিল করে দিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়নি। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি খায়রুল হক একটি ভুয়া রায় দিয়েছেন। উনি একটি ভুয়া রায় দিয়েছেন। তার মাধ্যমেই এই সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বাতিল করেছে। কারণ এই সরকার জনগণের ভোটে পাশ করার অবস্থা নেই বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তিনদিন আগে বললেন, যদি প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে দেশে একটি অপশক্তি আসবে। বর্তমান সরকারের চেয়ে বড় অপশক্তি কি দেশে আছে? এই অপশক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছে বলেই এখনো চালের দাম বাড়ছে। তেলের দাম বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সীমাহীন মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ বিহীন দেশে পরিণত করেছে। এখন বিদ্যুৎ বিলের এক কোণায় লেখা থাকে, 'শেখ হাসিানর উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ'। এই ঘরে ঘরে বিদ্যুতের নমুনা? কোথায় স্বয়সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ? ওনারা বলেন, হারিকেন নাকি মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাহলে মিউজিয়াম থেকে আবার হারিকেন কিভাবে ফেরত আসলো? আসলে জনগণের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করে দিয়েছে বিদেশে। এ সরকার এখন হায় হায় সরকারের পরিণত হয়েছে। এই সরকার যদি বেশিদিন ক্ষমতায় থাকে এই দেশটাকে হায় হায় দেশ বানিয়ে ছাড়বে। সুতরাং এই হায় হায়, খাই খাই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দুর্বার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এই বছরেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন হবে। এখন সরকার কিভাবে বিদায় নেবে তার জন্য সংলাপ চাই বিএনপি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরকারের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে জনগণের কাতারে আসলে তক্তে তাউস বঙ্গোপসাগরে ভেসে যাবে।
আজ রবিবার বিকেলে নগরীর কে.ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। দেশব্যাপী সীমাহীন লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে চরম অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা জেলা বিএনপির উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান বক্তার বক্তৃতা করেন, নগর বিএনপির সম্মানিত সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল। বক্তব্যের শুরুতেই ভোলায় পুলিশের গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী আব্দুর রহিমের মাগফেরাত কামনা করে নিহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, এই খুনের প্রতিশোধ না নিয়ে আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। যেই সরকার জনগণের উপর গুলিবর্ষণ করা শুরু করে, গুম-খুন-হত্যা, নির্যাতন নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে যায়। তখনই সেই সরকারে রপতন ঘণ্টা বেজে যায়। আওয়ামীলীগেরও পতনের সময় হয়ে গেছে। এখন শুধু দরকার একটি মাত্র ধাক্কা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাঁশিতে ফুক দেবেন, আন্দোলনের ডাক দিবেন। আমরাও তার নির্দেশের অপেক্ষা করছি, কখন তিনি আন্দোলনের ডাক দিবেন। তখনই আমরা রাজপথে নেমে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের পতন নিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ্। তার আগে সম্মানের সাথে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের ক্ষমতা; জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে। আর যদি তা না করে, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে। শ্রীলঙ্কার দিকে তাকিয়ে দেখুন, পালাবার পথ কিন্তু খুঁজে পাবেন না বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খানের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ সঞ্চালনা করেন, সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পি। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামিমুর রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য খান রবিউল ইসলাম রবি, খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. শফিকুল আলী মনা ও সদস্য সচিব মোঃ শফিকুল আলম তুহিন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ মজিবুর রহমান, নগর ও জেলা বিএনপি'র যুগ্ম-আহবায়ক আলহাজ্ব তরিকুল ইসলাম জহীর, শেখ আবু হোসেন বাবু, স ম আব্দুর রহমান, খান জুলফিকার আলী জুলু, সাইফুর রহমান মিন্টু, সৈয়দা রেহেনা ঈসা, অ্যাড. মোমরেজুল ইসলাম, মোল্যা খায়রুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন মফিজ, শেখ তৈয়্যবুর রহমান, এসএম শামীম কবীর, কেএম আশরাফুল আলম নান্নু, একরামুল হক হেলাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, খায়রুল ইসলাম খান জনি, অ্যাড. তছলিমা খাতুন ছন্দা, অ্যাড. কানিজ ফাতেমা আমিন, নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, এবাদুল হক রুবায়েদ, উজ্জল কুমার সাহা, আতাউর রহমান রনু, ইসতিয়াক আহম্মেদ ইশতি, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, মোল্যা কবির হোসেন, সজীব তালুকদার, অসিত কুমার সাহা, আব্দুল মান্নান খান, মোজাফফর হোসেন ও নূরুল আমীন বাবুল প্রমুখ।
প্রখর খরতাপ উপেক্ষা করে দুপুরের পর থেকে একেরপর এক মিছিল আসতে থাকে সমাবেশস্থলে। কিছু সময়ের মধ্যে সমগ্র এলাকা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মুর্হুমুর্হু স্লোগানে স্লোগানে বিদ্যুতের দাবি জানান বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। মিছিলকারীদের অনেকের হাতেই হ্যারিকেন দেখা যায়।