স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ সমাবেশে ডা. শাহাদাত হোসেন
আওয়ামী মাফিয়া সিন্ডিকেটের কারনে দেশ আজ দুর্ভিক্ষের কবলে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪৪ এএম, ১০ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:২৭ পিএম, ৯ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, ডাল, তেলসহ পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আওয়ামী লীগ আজকে বাংলাদেশকে এমন এক অবস্থানে নিয়ে গেছে যে মানুষ আর বাঁচার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না। বেঁচে থাকার জন্য যে ন্যূনতম খাবার প্রয়োজন সেটাও কিনতে পারছে না। মানুষের নিরাপত্তাও নেই। আওয়ামী লীগ সরকার যতবার ক্ষমতায় এসেছে তারা মানুষের স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। গণতন্ত্রের মোড়কে সেই একদলীয় শাসনব্যবস্থাই চালু করেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির একমাত্র কারণ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতাদের দুর্নীতি। আওয়ামী মাফিয়া সিন্ডিকেটের কারনে দেশ আজ দুর্ভিক্ষের কবলে।
আজ বুধবার বিকালে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সরকার প্রধান বলেছিল ক্ষমতায় আসলে ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। ২০০৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে তখন চালের কেজি ছিল ১৬/১৮ টাকা। কোথায় সে ১০ টাকা কেজির চাল? আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। মোটা চালের দাম বর্তমানে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। বিএনপির আমলে চিকন চালের দাম ছিল ২২ টাকা যা বর্তমানে ৮০ টাকা। সোয়াবিন তেলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৪৪ টাকা, বর্তমানে দাম হলো ২০০ টাকা। গরুর গোশতের দাম ছিল কেজি প্রতি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, যা বর্তমানে ৭০০ টাকা। মুসুর ডালের দাম ছিল কেজি প্রতি ৪৫ টাকা, যা বর্তমানে ১৩০ টাকা। ব্রয়লার মুরগীর দাম ছিল কেজি প্রতি ৫৫ টাকা, এখন ১৭৫ টাকা। গুঁড়ো দুধ ছিল কেজি প্রতি ২৮৫ থেকে ৩৪৫ টাকা, যা বর্তমানে ৬৫০ টাকা। পেয়াজের দাম ছিল কেজি প্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা, যা বর্তমানে ৫৫ টাকা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সরকারের সিন্ডিকেট দায়ী। এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের দুর্নীতির কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সকলের মধ্যে নাভিশ্বাস উঠেছে। টিসিবির লাইনে বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত। মধ্যবিত্ত মানুষ দরিদ্র হয়েছে। হাজার কোটি টাকা আওয়ামী সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতি বছর পাচার করছে। তাদের জন্য আবার সংসদে দায়মুক্তি আইন করা হয়েছে। এই সরকার দেশ বিদেশে হাইব্রিড সরকার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের সুনাম ফিরিয়ে আনতে হলে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এজন্য আন্দোলন প্রয়োজন। সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসেই এলপি গ্যাসের দাম বেড়েছে। এক মাস না গড়াতেই আবারও ভোক্তা পর্যায়ে নিত্যপণ্যটির দাম বাড়ানো হলো। এই পর্বে প্রতি কেজির এলপিজির দাম বাড়ানো হয়েছে ১২ টাকা ৫৪ পয়সা। ১২ কেজির সিলিন্ডার ১ হাজার ২৪০ টাকার বদলে নতুন দাম অনুযায়ী ভোক্তাদেরকে কিনতে হবে ১ হাজার ৩৯০ টাকায়। অর্থাৎ, ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম বেড়ে গেল ১৫০ টাকা ৫৬ পয়সা। এর আগে গত ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে প্রতিকেজি এলপিজি ৯৮ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১০৩ টাকা ৩৪ পয়সা করা হয়েছিল। মাস না পেরুতেই আবারও দাম বৃদ্ধির ঘোষণা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের যখন নাভিশ্বাস উঠছে, তখন এলপিজির এই দাম বৃদ্ধি অনেকটা মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি এবিএম পারভেজ রেজা বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের দুর্নীতির কারনে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। বাজারের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট তৈরি করা হয়েছে। তারা কৃত্রিমভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। চরম দুর্নীতির প্রভাব বাজারে গিয়ে পড়ছে।
চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুর পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি এবিএম পারভেজ রেজা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সভাপতি শওকত আজম খাজা, সহ সাধারণ সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন জনি। বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. মোরসালিন, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুল ইসলাম রাহি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি মো. সিরাজ উদ্দিন, আবু ইউসুফ, খায়রুল আলম দিপু, মুজিবুর রহমান, মো. আসলাম, হারুন আল রশিদ, মামুনুর রহমান, মঈনুদ্দিন রাশেদ, হারুনুর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, যুগ্ম সম্পাদক জমির উদ্দিন নাহিদ, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক নুরুল হুদা সোহেল, দক্ষিণ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ফৌজুল কবির ফজু, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুছ ছবুর, উত্তর জেলা সহ সভাপতি গিয়াসউদ্দিন চেয়ারম্যান, ওমর শরীফ, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, এস এম আবু মনসুর, শওকত আলী রাজু, দিদারুল আলম, দক্ষিণ জেলা সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান টিটু, সেলিম চৌধুরী, মো. সাহাবউদ্দিন, আহমদুর রহমান, রেজাউল করিম মাসুদ, মহানগর যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ভুইয়া, এম আবু বক্কর রাজু, গোলাম সরোয়ার, উত্তর জেলা যুগ্ম সম্পাদক আকবর আলী, ইউসুফ তালুকদার, জাহাঙ্গীর এলাহী, সাইফউদ্দিন কবির শিমুল, একরাম মিয়া, আলাউদ্দিন মনি, দক্ষিণ জেলা যুগ্ম সম্পাদক শফিউল করিম শফি, নাঈম উদ্দিন চৌধুরী, মোনায়েম খান, ওবাদুল হক রিকু, হেফাজ উদ্দিন চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, আতিকুর রহমান আতিক, মো. মোরশেদ, মো. ইব্রাহিম প্রমুখ।