সরকার ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি আর কোন নির্বাচনে যাবেনা - জয়নাল আবদীন ফারুক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:১৯ এএম, ৩ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৪৭ এএম, ১৬ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি আর কোন নির্বাচনে যাবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য জয়নাল আবদীন ফারুক।
চাল, ডাল, তেল, গ্যাসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আজ বুধবার খুলনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। এই সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না ঘোষণা দিয়ে তিনি সব ভেদাভেদ ভুলে রাজপথের আন্দোলনের জন্য প্রস্তত হতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় বাকশালের জুলুম থেকে মুক্তি মিলবেনা।
নতুন নির্বাচন কমিশনার বিএনপিকে আস্থায় নিতে ভালো ভালো কথা বলছেন উল্লেখ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, আমরা আপনাকে বিশ্বাস করিনা। ৩২২ জনের তালিকা থেকে ৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ দিয়েছে এই অবৈধ রাতের ভোটের সরকার। তারা যাদের ওপর আস্থা রেখেছে, আমরা তার অধীনে নির্বাচনে যেতে পারিনা। তিনি সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়ার দাবি জানান।
মার্চ মাসের শুরু থেকে মোবাইলে কলার টিউন হিসেবে একটি ভাষণ বাজছে উল্লেখ করে জয়নাল আবদীন বিটিআরসিকে বলেন, যদি এই মাসে ভাষণ বাজাতেই হয় তবে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা বাজান। জিয়া যখন রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছিলেন তখন আপনার কোথায় ছিলেন- প্রশ্ন রাখেন তিনি? তিনি বলেন, প্রতিটি অপকর্মের বিচার করা হবে। পালাবার পথ পাবেননা।
সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি অভিযোগ করে তিনি বলেন, তাদের ওয়ার্ড কমিটির নেতার কাছেও হাজার কোটি টাকা পাওয়া যায়। আর দেশের মানুষের দামের চাপে নাভিশ্বাস ওঠে। তিনি বলেন, এই সরকার অত্যাচারি সরকার। তারা খুন করেছে। গুম করেছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ২৫ লক্ষ মামলায় ৭৫ লক্ষ বিএনপির নেতাকর্মী আসামী। গোটা সপ্তাহ কাটে আদালতের বারান্দায়। মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করেছে। তারেক রহমানকে দেশে ফেরার পথ রুদ্ধ করেছে। এতো অত্যাচার নির্যাতন তবু একজন কর্মীও বিএনপি ত্যাগ করেনি দাবি করে তিনি বলেন,ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের কালো হাত ভেঙ্গে দিতে হবে। নতুবা ভবিষ্যতে কেউ এই দেশে রাজনীতি করতে পারবেনা। আগামীতে আর কোন কর্মসূচি গলির ভেতরে হবেনা ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, এরপর অনুমতি ছাড়াই বড় ময়দানে কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। তিনি রাজপথে এসে শক্তি পরীক্ষার জন্য শাসক দলের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
দুপুরে নগরীর কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্র ঘোষিত এ কর্মসূচি পালন করে খুলনা জেলা বিএনপি। জেলা কমিটির আহবায়ক আমীর এজাজ খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম, মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, শফিকুল আলম তুহিন, মো: তারিকুল ইসলাম জহির, আবু হোসেন বাবু, কাজী মাহমুদ আলী, আজিজুল হাসান দুলু, অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, সাইফুর রহমান মিন্টু, ডা: আব্দুল মজিদ, মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, খায়রুল ইসলাম খান জনি, কামরুজ্জামান টুকু, আওলাদ হোসেন, আনারুল হক সোহেল, মাহবুব হাসান পিয়ারু, তৈয়েবুর রহমান, শামীম কবির, একরামুল হক হেলাল, অ্যাডভোকেট তছলিমা খাতুন ছন্দা, উজ্জল কুমার সাহা, মো: মুজিবর রহমান। সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ জাহিদুর রহমান।
এর আগে দুপুর ২ টা থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থানা ও মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বিএনপি এবং ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল ও মহিলা দলের বিশাল বিশাল মিছির সমাবেশস্থলে এসে উপস্থিত হয়। কিছু সময়ের মধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সমাবেশস্থল। ৩ টা থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সমাবেশের কাজ শুরু হয়। এরপর সমাবেশে আগত দলীয় নেতাকর্মীরা কে ডি ঘোষ রোড ছাড়িয়ে আশেপাশের রাস্তায় অবস্থান নিতে বাধ্য হয়। এ সময় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও সরকারের অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে নেতাকর্মীরা মুর্হুমুর্হু শ্লোগান দেন।