হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালবাসায়
টাঙ্গাইলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৬ এএম, ১৮ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৫৫ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালবাসার মধ্য দিয়ে টাঙ্গাইলের সন্তোষে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে টাঙ্গাইলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে ভোর থেকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মানুষের ঢল নামে। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় ভাসানীর মাজার। বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মানুষ স্মরণ করে মহান এই নেতাকে। ভাসানীর অসংখ্য মুরিদান ও ভক্তদের কন্ঠে যুগ যুগ জিও তুমি মওলানা ভাসানী স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে মজলুম জননেতার সমাধিস্থল টাঙ্গাইলের সন্তোষে অবস্থিত মাজার প্রাঙ্গণ।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি উদ্বোধন করেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. এ আর এম সোলাইমান। এরপর ভাসানীর পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নেতৃত্বে মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় জেলা নবগঠিত বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট আহমেদ আযম খান, সদস্যসচিব মাহমুদুল হক সানুসহ কেন্দ্রীয় বিএনপি ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ দেশে মওলানা ভাসানীর মতো একজন নেতা খুবই প্রয়োজন। দেশে আজ একটি স্বেরাচারী সরকার মানুষের ঘাড়ে চেপে বসেছে। মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিরোধীদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন চরম আকার ধারণ করেছে। গণতন্ত্র রক্ষা আর ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে রাজপথে আন্দোলন করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে আর তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
গণস্বাস্থ্যের স্ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও গণসংহতির জোনায়েদ সাকি মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মওলানা ভাসানী বলেছিলেন কেউ খাবে কেউ খাবে না তা হবে না। ভাসানীর আদর্শকে অনুসরণ করেই এগিয়ে যেতে হবে। তিনি ভারতের আধিপত্যবাদের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, আজ সীমান্ত এলাকায় ভারতের সীমান্তরক্ষীরা মানুষ মারছে। অথচ সরকারের কোনো প্রতিবাদ নেই। সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পঞ্চাশ লাখ টাকা করে দেয়ার দাবি করেন তিনি।
জুনায়েদ সাকী বলেন, ভাসানী বলেছিলেন সকল প্রাণের ইনসান কায়েম করতে হবে। বাংলাদেশে আজ আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। ভোটাধিকার নেই। নির্বাচনের নামে তামাশা চলছে। সরকার একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র কায়েম করেছে।
ভাসানীর মাজারে ভাসানী অনুসারী পরিষদ, ভাসানী আদর্শ অনুশীলন পরিষদ, ভাসানী স্মৃতি পরিষদ, ন্যাপ ভাসানী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালের এইদিনে ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তার জীবনের সিংহভাগই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে।