নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমােেনা যাবে না - মির্জা আব্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০১ এএম, ২০ অক্টোবর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৫৭ এএম, ২৬ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে পূজামন্ডপে হামলার ঘটনায় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমােেনা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক দোয়া মাহফিলে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় এই দোয়া মাহফিল হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্য, গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে মানুষজন অসহ্য হয়ে গেছে, অস্থির মানুষ তাদের দৃষ্টি ফেরানোর জন্য, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হসপিটালে আছেন তার থেকে দৃষ্টি ফেরানোর জন্য, এই দেশটাকে উচ্ছন্নে নেয়ার জন্য এরা (ক্ষমতাসীন) আজকে সমাজে দাঙ্গা সৃষ্টি করছে। বিএনপির লোকদেরকে গ্রেফতার করছে, ইতিমধ্যে তিন শ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে ফেলেছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এ সমস্ত হামলা করে, মামলা করে, মোকাদ্দমা করে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। বিএনপি তিন তিনবারের পরীক্ষিত একটি দেশপ্রেমিক দল যে দেশকে ভালোবাসে।
তিনি বলেন, এসব (মামলা-হামলা) যদি চলতে থাকে, আমরা যদি প্রতিরোধ করতে না পারি ভাইয়েরা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব একদিন থাকবে না। দেশে যদি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হতে থাকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকে না। আমাদেরকে প্রচন্ডভাবে একে বাধা দিতে হবে।
আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠিত সম্প্রদায়িকতা বিরোধী মিছিল কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমি এই মিছিলের তীব্র সমালোচনা করে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ মিছিল করবে কার কাছে তারা কৈফিয়ত চাইবে? আমরা মিছিল করি, প্রতিবাদ করতে পারি, আমরা কৈফিয়ত চাইতে পারি সরকারের কাছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কার কাছে দাবি চাইবে আমি জানতে চাই। আওয়ামী লীগ সরকারের যেখানে দায়িত্ব হলো দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এখন তারা যদি মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামে তাহলে কী দাঁড়ায়? আমি মনে করি তাদের মিছিল নিয়ে নয়, গদি ছেড়ে রাস্তায় নামেন। আপনারা গদি ছাড়েন, নির্বাচন দেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোটে যারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে তাদের আমরা মেনে নেবো।
মির্জা আব্বাস বলেন, টেলিভিশনের সামনে বসলে, পত্র-পত্রিকা দেখলে দেখা যায়, পেঁয়াজ-তেল-লবণ সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বগতি। ভুতুড়ে পানি-গ্যাস বিল। লুটপাটের একটা কারখানা খুলে বসছে, লুটপাটের একটা কোম্পানি খুলে বসছে এই সরকার বাংলাদেশে। এই লুটপাট বন্ধ হয়ে যেতো যদি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতেন। সামাজিক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী খ্যাতি আছে। বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘু হলেও কখনোই তারা অনুভব করে নাই তারা সংখ্যালঘু। আমার সঙ্গে অনেক হিন্দু ক্লাস ফ্রেন্ড ছিলো ইতিমধ্যে তারা মারা গেছেন, অনেকে চলে গেছে। পূজা-পার্বণে এক সাথে চলেছি। আমার এলাকায় (শাহজাহানপুর) ২৫ ভাগ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। কেউ বলতে পারবে না যে, এলাকায় কোনদিন দাঙ্গা হয়েছে। আমি মির্জা আব্বাস ভারতে বাবরী মসজিদ ভাঙার সময়ে আমি তাদের পাহারা দিয়েছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে। কুমিল্লায় পূজামন্ডপে কোরআন শরীফ রাখার ঘটনা এবং বিভিন্ন স্থানে পূজামন্ডপে হামলা করে ক্ষমতাসীনরা দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগও করেন তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদল দক্ষিণের আহবায়ক গোলাম মাওলা শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি রফিক হাওলাদার, আবুল কালাম আজাদ, সিনিয়র যুগ্ম সাদারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামান, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন প্রমুখ।