ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েলসহ দুইজন দুই দিনের রিমান্ডে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০১ এএম, ২৫ আগস্ট,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১১ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
রাজধানীর জিয়া উদ্যানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ এবং গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রুমির দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজ দুই আসামিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী নিহার হোসেন ফারুকসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের জন্য আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সোমবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা থেকে ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রুমিকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছাত্রদল নেতা সিরাজুল ইসলামকে ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ। অন্য দুইজনকে জিয়া উদ্যানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ এবং গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় গ্রেফতার দেখায়। পরে তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করে। সিরাজুলকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মামলার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত ১৭ আগস্ট বেলা ১১টায় চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যাওয়া নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে দলটির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। তবে বিএনপির অভিযোগ, শুধু কাঁদানে গ্যাসের শেল নয়, গুলিও চালিয়েছে পুলিশ। এর পরে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে মেট্রোরেল প্রকল্পের গাড়িসহ যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় মেট্রোরেল প্রকল্পের অ্যাডমিন অ্যান্ড সিকিউরিটি অফিসার আব্দুস সালাম বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতি : জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রুমীকে সোমবার রাত ১০টায় যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তুলে নিয়ে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত তাদের কোনো হদিস দিচ্ছে না। এটি ভয়াবহ অমানবিক ও দস্যুবৃত্তিমূলক কাজ। রাষ্ট্রের মদদে এখনও বিরোধী দল নিধনে বেপরোয়া কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। মিডনাইট নির্বাচনের পরও সরকার নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ভয় পাচ্ছে। অজানা আতঙ্কে সবসময় উদ্বিগ্ন থাকছে। তাই গুম, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো নিষ্ঠুর কাজ অব্যাহত রেখেছে। বিরোধী দলশূন্য না করলে নব্য বাকশালী ব্যবস্থা কায়েম করা যাবে না। তাই বিরোধী দল ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে হরণ করতেই বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের অদৃশ্য করা হচ্ছে। গতকাল রাতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এবং জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রুমীকে তুলে নিয়ে যাওয়া অশুভ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিপজ্জনক কোনো কিছু ঘটার ইঙ্গিতবাহী। বিরাজমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, অশান্তি ও গভীর শংকার মধ্যে দিন যাপন করছে। এই তিনজন ছাত্রদল নেতা নিখোঁজ থাকার ঘটনায় তাদের পরিবার ও বিএনপি নেতাকর্মীরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমি অবিলম্বে তাদেরকে প্রকাশ্যে উপস্থিত করার জন্য আহবান জানাচ্ছি। কারণ তাদেরকে সরকারের এজেন্সিগুলোই তুলে নিয়ে গেছে।
এদিকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রুমির মুক্তি দাবি করেছেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল।