হারুনুর রশিদ এর উপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে তারেক রহমান ও মহাসচিবের যৌথ বিবৃতি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৬ পিএম, ১৪ আগস্ট,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৫ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
নোয়াখালী সদর উপজেলার ২০নং আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মোল্লাকে গতকাল শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় তার নিজ বাড়ীর সামনে সরকারদলীয় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী পৈশাচিক কায়দায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ী গুলি বর্ষণে বিএনপি কর্মী রমিজ উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আওয়ামী সসন্ত্রাসীদের এই হত্যাযজ্ঞ ও নারকীয় হামলাকে কাপুরুষোচিত আখ্যা দিয়ে এই মর্মস্পর্শী ও হৃদয়বিদারক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান।
আজ শনিবার এক বিবৃতিতে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, "দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে হত্যার মাধ্যমে হাত রক্তে রঞ্জিত করে সরকার ও আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রটিকে এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। শহর, গ্রামসহ দেশের জনপদের পর জনপদে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের মানুষ হত্যার মহাযজ্ঞ যেন থামছেই না। সন্তানহারা পিতা-মাতা, স্বামীহারা স্ত্রী ও পিতাহারা সন্তানদের আহাজারীতে প্রতিদিনই আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল-বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা কব্জায় রাখাটাই এখন আওয়ামী রাজনীতির সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সরকার বিএনপি'র বলিষ্ঠ নেতাকর্মীদের বেছে বেছে হত্যা করার মিশন নিয়ে কাজ করছে, আর সেই মিশনেরই নিষ্ঠুর শিকার হলেন হারুনুর রশিদ মোল্লা। তাকে নির্মম কায়দায় হত্যা সরকারের ধারাবাহিক প্রাণঘাতি নৃশংসতারই আরেকটি বহি:প্রকাশ। দেশকে গণতন্ত্র ও রাজনীতি শুণ্য করতে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের প্রাণ কেড়ে নেয়ার দৌরাত্ম এখন সীমাহীন পর্যায়ে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে-যাতে এই ধরণের হত্যাকান্ডের মাধ্যমে সমাজের মধ্যে একটা আতঙ্ক বিরাজ করে এবং কেউ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস না পায়। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতার মোহে অন্ধ, বেপরোয়া ও মানবিকবোধশুণ্য হয়ে পড়েছে। দুর্বিনীত অনাচার ও প্রতিদিন হত্যাকান্ড সংঘটিত করে দেশকে এক মহা দুর্যোগের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। তবে রক্তপাত ঘটিয়ে মানুষের জীবন কেড়ে নিয়ে ভীতির সৃষ্টি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবেনা। জনগণ আর বসে থাকবে না, দু:শাসন মোকাবেলায় অব্যাহত রক্তপাতের কর্মসূচিকে সম্মিলিত শক্তি দিয়ে জনগণ প্রতিহত করবে। আমি অবিলম্বে হারুনুর রশিদ মোল্লাকে হত্যাকারী ও রমিজ উদ্দিনকে গুলি করে গুরুতর আহতকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। সন্ত্রাসীদের দ্বারা নির্মমভাবে নিহত হারুনুর রশিদ মোল্লা'র বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকে কাতর পরিবারবর্গ ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। গুরুতর আহত রমিজ উদ্দিন এর আশু সুস্থতা কামনা করছি।"
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর বিবৃতি
পৃথক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নোয়াখালী সদর উপজেলার ২০নং আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মোল্লাকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কর্তৃক নির্মমভাবে হত্যা এবং বিএনপি কর্মী রমিজ উদ্দিনকে গুলি করে গুরুতর আহত করার কাপুরুষোচিত ঘটনায় ধিক্কার ও নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, "হারুনুর রশিদ মোল্লা বিএনপি'র একজন বলিষ্ঠ নেতা হওয়ায় তাকে প্রতিহিংসাবশত: পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়া হলো। সরকারের মদদেই এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। এধরনের কাপুরুষোচিত হত্যাকান্ডের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। হারুনুর রশিদ মোল্লাকে হত্যা এবং রমিজ উদ্দিনকে গুলি করে গুরুতর আহত করা বর্তমান ফ্যাসিষ্ট সরকারের নিরবচ্ছিন্ন অপকর্মেরই অংশ। দেশে সুষ্ঠু বিচারিক ব্যবস্থা তিরোহিত হয়ে গেছে বলেই ঘরে-বাইরে কোথাও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যার মতো অপরাধ করেও শাস্তি না পাওয়ার কারণে কিংবা শাস্তি পেলেও সরকারের আনুকুল্যে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে বলেই তারা আরও দ্বিগুন উৎসাহে অপরাধ সংঘটন করতে সাহস পাচ্ছে। দেশে এখন আইন কানুনের ছিটেফোটাও অবশিষ্ট নেই। ফলে রাষ্ট্র চলছে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্তাস এবং 'জোর যার মুল্লুক তার' এই নীতির ওপর ভর করে। করোনার ভয়াবহ দুঃসময়েও আওয়ামী সরকার তাদের মসনদ রক্ষায় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমণ-নিপীড়ণ চালাতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের প্রাণ কেড়ে নিয়ে গোটা দেশটাকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে রুপান্তরিত করেছে। সরকারের পায়ের নীচের মাটি সরে গেছে বলেই তারা এখন হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে সন্ত্রাসী লালন পালন ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে চলেছে। দেশের এই ভয়াবহ অবস্থা উত্তরণে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই।
আমি অবিলম্বে হারুনুর রশিদ মোল্লার হত্যাকারী এবং রমিজ উদ্দিনকে গুরুতর আহতকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হারুনুর রশিদ মোল্লা'র রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকাহত পরিবারের সদস্যবর্গ ও গুণগ্রাহীদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রমিজ উদ্দিনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।"
এছাড়াও পৃথক পৃথক বিবৃতিতে বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোঃ শাহজাহান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম নোয়াখালী সদর উপজেলার ২০নং আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মোল্লাকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কর্তৃক নির্মমভাবে হত্যা এবং বিএনপি কর্মী রমিজ উদ্দিনকে গুলি করে গুরুতর আহত করার অমানবিক ও ন্যাক্কারজনক ঘটনায় ধিক্কার ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে হারুনুর রশিদ মোল্লাকে পৈশাচিকভাবে হত্যাকারী এবং রমিজ উদ্দিনকে নিষ্ঠুরভাবে গুলি চালিয়ে গুরুতর আহতকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও নজীরবিহীন শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হারুনুর রশিদ মোল্লার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকাহত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত রমিজ উদ্দিনের আশু সুস্থতা কামনা করেন।