মদ-হরিণের চামড়ার বিষয়ে যা বললেন হেলেনাকন্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩০ এএম, ৩১ জুলাই,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১০:১৭ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২৪
আওয়ামী লীগের পদ হারানো ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালানোর পর তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসায় অভিযানের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য, বন্য প্রাণীর চামড়া ও ওয়াকিটকি সেট উদ্ধার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দফতরে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মেয়ে জেসিয়া আলম মদের বিষয়ে বলেন, আমরা করোনাকালে কোনো অ্যালকোহল সেবন করিনি। আমার ভাইয়ার মদ সেবনের লাইসেন্স আছে। ওনারা সেই লাইসেন্সও নিয়ে গেছে।
বাসা থেকে আটক হরিণের চামড়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আম্মুর পরিচিত নেতানেত্রীরা ভাইয়ার বিয়েতে এটা গিফট করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অনেক দেশে ঘুরেছি। বিদেশ থেকে আসার পর যে মুদ্রাগুলো বেচে যায় সেগুলো তো রাস্তায় ফেলে দিতে পারি না।
বাসায় ক্যাসিনো আছে কি না এই বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি দাবি করেন, ক্যাসিনো খেলতে যে বোট আর সরঞ্জাম লাগে তা নেই আমাদের। ধরেন বাসায় তাস খেলে না কেউ? সে রকম একটা বিষয়। জাস্ট ক্যাসিনোর চিপগুলো ছিল বাসায়।
জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও এই ব্যবসায়ী এবছর ১৭ জানুয়ারি উপকমিটির সদস্য হয়েছিলেন। তার আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের দিকে তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন।
সম্প্রতি চাকরিজীবী লীগ নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নাম যুক্ত করে নতুন সহযোগী সংগঠন গঠনের ঘোষণা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর। এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি।
তার এমন কর্মকা-ে বিব্রত হন খোদ আওয়ামী লীগেরই শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এরই সূত্র ধরে শনিবার হেলেনা জাহাঙ্গীরের সদস্য পদ আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটি থেকে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, একটা উপকমিটিতে থাকলে কাজ করার জন্য সবার সঙ্গে আলোচনা করতে হয়। তার কর্মকান্ডে উপকমিটি বিব্রত। তাই তাকে সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিন বলেন, বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িত থাকার জন্য গত মাসেই তাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই চিঠির জবাব দেননি তিনি। এজন্য নির্দিষ্ট সময় পর এটা স্বাভাবিকভাবেই অব্যাহতি হয়ে গেছে। কাজেই বলা যায়, বর্তমানে তিনি ওই কমিটিতে আর নেই।
ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজেকে চাকরিজীবী লীগের সভাপতি দাবি করেন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাহবুব মনিরের নাম উল্লেখ করেন। এমন ঘটনায় ফেসবুকজুড়ে সাধারণ মানুষের ভেতরে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।