প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘অনভিপ্রেত ও রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত’ - বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫১ এএম, ৫ জুলাই,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৪১ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘অনভিপ্রেত ও রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে শনিবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই মন্তব্য করেন। উত্তরার বাসা থেকে জুম নেটওয়ার্কে এক সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি মহাসচিব। সংবাদ সম্মেলন গত শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ তুলে ধরা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার সংসদে সংসদ নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার বক্তব্য অনভিপ্রেত এবং রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটা রুচিহীন ও কল্পকাহিনী ছাড়া আর কিছুই নয়। সংসদ নেতা তার মনগড়া কল্পকাহিনীর মধ্য দিয়ে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী এবং জনগনের আস্থাভাজন প্রিয় নেতাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন। এই ধরনের বক্তব্য সংসদ নেতার কাছ থেকে জাতি আশা করে না। এটা সমস্ত জাতিকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। এই ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, সংসদ নেতার এই ধরনের মন্তব্য খারাপ নজির স্থাপন করেছে।
সংসদে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সংসদে দেশনেত্রী বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ শালীনতা বিবর্জিত বক্তব্যে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়। সভা মনে করে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে সাংবিধানিক এবং প্রচলিত আইনের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের আপোষহীন সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে তার নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তার পাপ্য জামিন পর্যন্ত তাকে দেয়া হয়নি। অথচ একই ধরনের মামলা অন্যান্য প্রায় সকল অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হয়েছে। দেশনেত্রীর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বাসভবনে সাময়িকভাবে স্থানান্তরের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা প্রশাসনিক নির্দেশ। আইনের কোথাও একথা বলা হয়নি যে, সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে পারবেন না। যেখানে খুনের মামলায়, ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি অথবা আজীবন মৃত্যুদন্নড প্রাপ্ত আসামি মুক্তি নিয়ে বিদেশে চলে যেতে পারে সেখানে এদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রেরর জন্য যিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন, জনগণের ভোটে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে নির্বাচিত তিন বার প্রধানমন্ত্রী ও দুইবার বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন তাকে মানবিক কারনে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া যাবে না-এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের যে নির্দেশ এবং যে আইনের বলে তারা নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশে আবার তাকে নতুন নির্দেশে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে সরকার পারেন। আসলে তারা(সরকার) নিজেদের ক্ষমতা নিজেরাই খর্ব করছে। এর একমাত্র উদ্দেশ্যে যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে একটা বৈরী মনোভাব প্রদর্শন করা এবং দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলকভাবে এই ব্যবস্থাটা তারা করেছেন।
স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে যে, সরকার নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আজীবন সংগ্রামী বাংলাদেশের জনগণের প্রিয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে সকল ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কোবিভ-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য এই অযোগ্য সরকারের অযোগ্যতা, দুর্নীতি এবং উদাসীনতা দায়ী। প্রায় ১৫ মাস সময় নিযেও সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। ২০২০ সালের মার্জ মাস হতে কোভিড-১৯ করোনার প্রাদুর্ভাবের ফলে সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউন, সাধারণ ছুটি, সীমিত লকডাউন, কঠোর লকডাউনের ফলে প্রায় ২ কোটির ওপরে মানুষ দরিদ্র হয়েছে, কর্মচ্যুত হয়েছে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক। দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক ৮৫ শতাংশ সংখ্যায় ৫ কোটিরও বেশি প্রকৃত অর্থে কর্মহীন। অবিলম্বে দিন আনেক দিন খায়, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, দোকান শ্রমিক, হকার, প্রান্তিক কৃষকদের জন্য এক কালীন ১৫ হাজার টাকা প্রদানের আহবান জানাচ্ছি।
‘দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ক্রমাগত বর্ষণের ফলে এবং ভারতের উজানে সকল বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে প্রায় ১০টি জেলাঢ আকস্মিক ভাবে বন্যা পরিস্থিতি উদ্ভব হওয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অপরিকল্পিত ও দুর্বল নির্মাণ কাজের কারণে সড়ক ও বাঁধগুলো ভেঙে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাপক ফসলহানী হওয়ায় কৃষকের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় অবিলম্বে সরকারি ত্রাণ বিতরণ এবং বীজতলা ধবংস হয়ে যাওয়ায় নতুন বীজ সরবারহের দাবি জানাচ্ছি। দলের নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপদ্রুত এলাকায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহবানও জানাচ্ছি।
‘বিএনপি থেকে অনেকে তলে তলে আওয়ামী লীগে যোগাযোগ করছে’- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এরকম বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, এগুলো তাদের দিবাস্বপ্নের মতো। বিএনপিকে তার জন্মের পর থেকে বিশেষ করে তার প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদতের পর থেকে বারবার চেষ্টা করা হয়েছে এই দলটিকে নিশ্চিহ্ন করবার, ভেঙে ফেলবার, জনগণকে এই দল থেকে বিচ্ছিন্ন করবার।। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রায় তিন বছর কারাগারে আটক রেখে এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত রেখে, আমাদের ৩৫ লক্ষ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা ও গায়েবী মামলা দিয়ে বারবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা বিএনপিকে ভেঙে ফেলতে পারেনি। বিএনপি একটা বহমান বিশাল স্রোতস্বিনী নদী। এখান থেকে কখনো কখনো খড়কুটো এসে পড়ে, আবার খড়কুটো এসে চলে যায়। তাতে করে বিএনপির কোনো ক্ষতি হয়নি, ক্ষতি হয় না। বিএনপি এদেশের জনগণের দল, মূলত এটি জনগণের রাজনৈতিক রাজনীতি করে। আমি সবসময় বলি, ইটস এ প্ল্যাটফরম অব পিপলস। এখানে যারা এসেছে তারা মনে করে যে, বিএনপির যে রাজনীতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের যে রাজনীতি, যে দর্শন, সেই দর্শনকে সঙ্গে করে এই দলটি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যায় সামনের দিকে এবং সত্যিকার অর্থেই একটা মুক্ত রাষ্ট্র নির্মাণ করে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য টিকার ব্যবস্থা না করে সরকার ছলনা ও প্রতারনা করছে অভিযোগ করে অবিলম্বে তাদেরকে বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেয়া নিশ্চিত করার দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
সভায় নিম্নে বর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয় :
১। সভায় বিগত ২৬ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।
২। সভায় দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সদস্যবৃন্দকে অবহিত করেন।
৩। সভায় জাতীয় সংসদে দেশনেত্রী বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ শালীনতা বিবর্জিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়। সভা মনে করে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে দেশনেত্রী সাজানো মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে সাংবিধানিক এবং প্রচলিত আইনের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের আপোষহীন সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে তাঁর নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর প্রাপ্য জামিন পর্যন্ত তাকে দেওয়া হয়নি। অথচ একই ধরনের মামলায় অন্যান্য প্রায় সকলকে অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হয়েছে। দেশনেত্রী পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বাসভবনে সাময়িক ভাবে স্থানন্তরের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা প্রশাসনিক নির্দেশ। আইনের কোথাও এ কথা বলা নেই যে সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে পারবেন না। যেখানে খুনের মামলায়, ফাসীর সাজাপ্রাপ্ত আসামি অথবা আজীবন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি মুক্তি নিয়ে বিদেশে চলে যেতে পারে সেখানে এই দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য যিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে নির্বাচিত তিন বার, প্রধানমন্ত্রী ও ২ বার বিরোধী দলের নেত্রী ছিলেন তাকে মানবিক কারণে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া যাবে না এটা কোন মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। গতকাল সংসদে সংসদ নেতা হিসাবে শেখ হাসিনার বক্তব্য অনভিপ্রেত এবং রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত। সংসদ নেতা তাঁর মন গড়া কল্প কাহিনীর মধ্যে দিয়ে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী এবং জনগণের আস্থাভাজন প্রিয় নেতাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন। সভা এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ জানায়। সভা মনে করে সংসদ নেতা ও আইন মন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য খারাপ নজীর স্থাপন করছে। সভা মনে করে এই নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আজীবন সংগ্রামী বাংলাদেশের জনগণের প্রিয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করবে।
৪। সভায় ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্ট কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এবং ফলশ্রুতিতে মৃত্যুর হার ভায়াবহ ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিএনপি বারবার সতর্ক করবার পরও সরকার সংক্রমণ প্রতিরোধের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পাবার জন্য সরকারের উদাসীনতা, অযোগ্যতা ও দুর্নীতিকে দায়ী করা হচ্ছে। জেলা সদরে অক্সিজেনের অভাব, হাইফ্লো ন্যাজাল কেনোলার তীব্র সংকট, শতকরা ৫২ ভাগ জেলা হাসপাতালে কোন ও আইসিইউ বেড না থাকা, ওষুধের অপ্রতুলতা ঢাকার বাইরের জনগণের জীবন মারাত্মক ভাবে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। একদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যাপক নৈরাজ্য ও দুর্নীতি অন্যদিকে করোনা টীকার দুষ্প্রাপ্যতা কোটি কোটি মানুষের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সভা মনে করে এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থতার জন্য এই অযোগ্য সরকারের অযোগ্যাতা, দুর্নীতি এবং উদাসীনতা দায়ী। প্রায় ১৫ মাস সময় নিয়েও সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। এ বিষয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির জৈষ্ঠ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং করোনা চিকিৎসা ও টীকা কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আসামি ৫ জুলাই বিস্তারিত বক্তব্য রাখাবেন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে।
৫। ২০২০ সালের মার্চ মাস হতে কোভিড-১৯ করোনার প্রাদূর্ভাবের ফলে সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউন, সাধারণ ছুটি, সীমিত লকডাউন, কঠোর লকডাউনের ফলে প্রায় ২ কোটির ওপরে মানুষ দরিদ্র হয়েছে। কর্মচ্যুত হয়েছে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক। দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক ৮৫ শতাংশ, সংখ্যায় ৫ কোটিরও বেশি প্রকৃত অর্থে কর্মহীন। দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের জন্য সরকার কোনও পরিকল্পিত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। দিন আনে দিন খায় মানুষ, পরিবহণ শ্রমিক, দোকান শ্রমিক, প্রান্তিক কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হকার এরা সবাই কর্মহীন হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অধ্যাহারে জীবন কাটাচ্ছে অথচ সরকার প্রণোদনা বাজেট বরাদ্দেও তাদের জন্য কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। সভা অবিলম্বে এই সব দিন আনে দিন খায়, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক, পরিবহণ শ্রমিক, দোকান শ্রমিক, হকার, প্রান্তিক কৃষকদের জন্য এক কালীন ১৫ হাজার টাকা প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছে।
৬। সভা, সম্প্রতি আইন ও শালিশ কেন্দ্র ‘আসক’ কতৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে গত জানুয়ারি মাস হতে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘনের যে বিবরণ রেরিয়ে এসেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগ জনক বলে মনে করে। ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ, হত্যা, বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড, সাংবাদিক নির্যাতন এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টের অপব্যবহারে সাংবাদিক নির্যাতনের চিত্র মধ্য যুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। এই জবাবদিহীহীন অনির্বাচিত সরকারের একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠার লক্ষে সারা দেশে যে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে তারই ফলশ্রুতি হচ্ছে এই ভয়াবহ মানবাধিকার পরিস্থিতি। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রমুখ, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্রমাবনিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সভা এই বিষয় গুলো নিয়ে যথাযথ ভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
৭। সভায় ডেল্টা ভেরিয়েন্টে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে বিএনপির যে সকল নেতা-কর্মী মারা গেছেন তারা সহ সকল মৃত্যু বরণকারী মানুষের জন্য শোক প্রকাশ করা হয় এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
৮। সভায় ক্রমাগত বর্ষণের ফলে এবং ভারতের উজানে সকল বাঁধ গুলোর গেট খুলে দেওয়ার কারনে প্রায় ১০টি জেলায় আকস্মিক ভাবে বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। অপরিকল্পিত এবং দুর্বল নির্মাণ কাজের কারনে সড়ক ও বাঁধ গুলো ভেঙ্গে যাওয়ায় জন-দূর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাপক ফসল হানি হওয়ায় কৃষকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সভায় এই সব বন্যাদুর্গত অঞ্চলে অবিলম্বে সরকারী ত্রাণ বিতরণ এবং জীবতলা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় নতুন বীজ সরবরাহের দাবী জানায়। উপদ্রুত এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের যথা সম্ভব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।