বদলে যাবে পুরান ঢাকা, হবে ব্লকভিত্তিক পুনঃউন্নয়ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৩ এএম, ১৪ মার্চ,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৩৭ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিশ্বে বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান তলানিতে। আর ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে অপরিকল্পিত আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা পুরান ঢাকা। সংকীর্ণ রাস্তাঘাট, ঘনবসতিসহ নানান সমস্যা বিদ্যমান সেখানে। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। এমন একটি অপরিকল্পিত এলাকাকে ব্লকভিত্তিক পুনঃউন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এটি বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে পুরান ঢাকা। বসবাসের আধুনিক ঠিকানা পাবেন বাসিন্দারা। তবে এজন্য সেখানকার বাসিন্দাদের মতামতকে গুরুত্ব দেবে সরকার। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
তারা বলছেন, বাসযোগ্যতার সূচকে পুরান ঢাকা অনেক নিম্ন অবস্থানে। এর প্রধান কারণ অতিরিক্ত জনসংখ্যা ও অধিক জনঘনত্ব। তবে নাগরিক সুবিধা ও পরিষেবা নিশ্চিত করে পুরান ঢাকার পুনঃউন্নয়ন সম্ভব। তার আগে এর সুফল সম্পর্কে মানুষকে অবগত করতে হবে। অর্জন করতে হবে আস্থা। এছাড়া যথাসময়ে প্রকল্প কাজ শেষ এবং আনুপাতিক হারে উন্নয়ন করা সম্পত্তির ভাগের নিশ্চয়তা দিতে হবে। প্রকল্প চলাকালীন জমি মালিকদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে ক্ষতিপূরণের। ঢাকাকে বসবাসযোগ্য করতে প্রথমে (১৯৯৫-২০১৫) একটি বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) নেয়া হয়েছিল। ২০১০ সালের জুনে ড্যাপ গেজেট আকারে প্রকাশ হলেও তাতে নানা অসঙ্গতি দেখা দেয়। পরে ড্যাপ পর্যালোচনার জন্য সাত মন্ত্রীকে নিয়ে একটি ‘মন্ত্রিসভা কমিটি’ গঠন করে সরকার। তখন আবারও ড্যাপ সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। ফলে বাস্তবে রূপ পায়নি ওই পরিকল্পনা। পরে ২০১৫ সালের মার্চে আগের ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন এবং স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে একটি জনবান্ধব ও বাস্তবসম্মত ড্যাপ (২০১৬-২০৩৫) প্রণয়নের কাজ শুরু করে রাজউক। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সচিবালয়ে ড্যাপ পর্যালোচনা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ড্যাপ চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। পরে তা অনুমোদন এবং মতামতের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) পুরান ঢাকা পুনঃউন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। চলতি মাসে ড্যাপ চূড়ান্ত বা গেজেট হওয়ার কথা। গেজেটের পরপরই পুরান ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণে পুনঃউন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
তিনি বলেন, পুরান ঢাকার এক কাঠা-দুই কাঠা জমিতে অপরিকল্পতিভাবে বহুতল অসংখ্য ভবন গড়ে উঠছে। এমনও দেখা গেছে, এক দেওয়ালে দুই ভবন তৈরি করতে। ভেতরে আলো-বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা নেই। এমন ছোট জমিগুলো একত্র করে ব্লকভিত্তিক পুনঃউন্নয়ন করা হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে পুরান ঢাকার মানুষের মতামতকে।