দামুড়হুদায় কলাগাছের সুতায় পণ্য তৈরি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:২০ পিএম, ১৬ আগস্ট,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১১:২৮ এএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরা গ্রামে পরিত্যক্ত কলাগাছের আঁশযুক্ত সুতা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন পণ্য। পরিত্যক্ত কলা গাছের আঁশযুক্ত সুতার তৈরি পণ্যে স্বপ্ন দেখছেন ওই গ্রামের নারী-পুরুষেরা। ওই গ্রামে কলাগাছের সুতা কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি ক্ষুদ্র কুটিরশিল্পও।
আঁশযুক্ত সুতায় নৌকা, ওয়াল ম্যাট, ফুলদানি, শিকে, কলা গাছ, ক্যাপ, হ্যারিকেন, পাপোশসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মানুষের নজর কাড়তে শুরু করেছে ওই সকল পণ্যে।
কলা গাছের আঁশযুক্ত সুতায় তৈরি পণ্য গুলো ইতোমধ্যে বিভিন্ন সরকারি দফতর সহ বাসা বাড়িতেও শোভা পাচ্ছে। ওই গ্রামের ২০-২৫জন নারী পুরুষ এ শিল্পে নিয়োজিত হয়েছেন। তারা চেষ্টা করছেন তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে, স্বপ্ন দেখছেন আগামীর। এরমধ্যেই প্রশিক্ষিতদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে একটি সমিতি।
দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরা গ্রামের শাহিন ও তার বন্ধু দৈওলী গ্রামের সাঈদ জানান, প্রায় দু'বছর আগে সোশাল মিডিয়াতে একটি ভিডিও দেখে সেখান থেকে তারা কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির বিষয়ে অবগত হয়। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে কিনে আনে সুতা তৈরির মেশিন, শুরু করে কার্যক্রম। বেশ কিছুদিন সুতা তৈরি করা কালিন তাদের মাথায় এ সুতা দিয়ে পণ্য তৈরির চিন্তা জাগ্রত হয়।
প্রথমে বাড়ির মেয়েদের নিয়ে শুরু করে পণ্য তৈরি। পরে আস্তে আস্তে গ্রামের অন্য নারী পুরুষদেরকেও যোগ করা হয় এ পেশায়। এ পেশার নারী পুরুষেরা বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে তারা একত্রে জমা করেন সমিতিতে। সেখান থেকে বিক্রি করা শুরু হয় এসকল পণ্য।
তারা আরও জানান, এ সকল পণ্য তৈরি করে বাজারজাত করে বেশ লাভের মুখ দেখছে। বাংলাদেশ কুটির শিল্প করপোরেশনেও এ সকল পণ্যের নমুনা পাঠানো হয়েছে। জেলা শহর ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ডার পাওয়া শুরু হয়েছে তাদের। তবে লোকবল ও অর্থ স্বল্পতা থাকায় এ সকল পণ্য সরবরাহ করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। তাদের দাবী সরকারি সহজ শর্তে ঋণ।
দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো মনিরুজ্জামান বলেন, এ উপজেলার দুই তরুন উদ্যোক্তা কলাগাছের পরিত্যক্ত দিয়ে সুতা তৈরি করে তা দিয়ে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী তৈরি করছে। যা তৈরিতে তাদের কে সর্বক্ষণিক সহযোগিতা করা হচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে।
এ সকল পণ্য তৈরির প্রধান উপাদান কলা গাছ। তাই কলা চাষে এ এলাকার কৃষকদের কে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আর যারা ঔই সকল পণ্য তৈরি করছেন তাদের কে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। যাতে করে তারা আরো ভালো ভাবে এসকল পণ্য তৈরি করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারে।