আমতলীতে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ও ভুতুরে বিলে জনজীবন বিপর্যস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৯ পিএম, ১ জুন,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৩০ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বরগুনার আমতলী উপজেলায় ঘনঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং এ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন উপজেলাবাসী। একদিকে প্রচন্ড গরম অন্যদিকে ঘন ঘন লোডশেডিং - এ যেন আমতলীর নিত্যদিনের চিত্র। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরে প্রচন্ড গরমের মধ্যে বৈদ্যুতিক পাখা মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে থাকে। কিন্তু দিনে ও রাতের বেলায় মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং ও ঘন ঘন বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার কারণে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি। অপরদিকে বছরজুড়ে বিদ্যুতের লাইনের সমস্যা অযুহাতে ঘন ঘন লোডশেডিং থেকে পরিত্রান চায় আমতলী উপজেলাবাসী।
এখন আমতলীর প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে বিদ্যুতের সেবা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ নিয়ে অভিযোগের যেন শেষ নেই গ্রাহকদের। তীব্র গরমে চরম ভোগান্তি ও নাজেহাল হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলার প্রায় ৫৭ হাজার পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের। ঘন ঘন লোডশেডিং, গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত পরিমানে বিদ্যুৎ বিল আদায়, মিটার ভাড়া ও ডিমান্ট চার্জের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় এবং শহর অঞ্চলে লোডশেডিং কিছুটা কম থাকলেও উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামে ঘন ঘন লোডশেডিং দেওয়াসহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের।
ঋতু বদলের সাথে সাথে প্রকৃৃতি যেমন তেঁতে উঠছে তেমনি গরম শুরু হওয়ার সাথে সাথে প্রতিদিন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে নিত্য বিড়ম্বনায় পড়ছেন আমতলী উপজেলাবাসী। গ্রাম-গঞ্জের মানুষের প্রধান বাহন হচ্ছে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক। রাতে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে ওই ইজিবাইকগুলোতে চার্জ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে উপজেলাটিতে গাড়ি চলাচলে সাধারণ মানুষের দূর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে।
ভূক্তভোগীরা জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর থেকেই ঘন ঘন লোডশেডিং এর কবলে পড়ে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমতলীবাসীকে। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের অন্য কথা, সরবরাহ লাইনে ত্রুটি ও নানাবিধ সমস্যার কারনে বাধ্য হয়ে এলাকাভেদে ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিং, উপজেলার হাজার হাজার গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত পরিমানে বিদ্যুৎ বিল আদায়, মিটার ভাড়া ও ডিমান্ট চার্জের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে নিচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রতিবাদ করেও এর কোন প্রতিকার পাচ্ছি না।
শহর অঞ্চলের গ্রাহকরা জানায়, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ সরবরাহ লাইনে ত্রুটি ও নানাবিধ সমস্যার অযুহাতে ঘন ঘন লোডশেডিং দিচ্ছে। তারা আরো বলেন, লোডশেডিংয়ের বিষয়টি মুঠোফোনে জানতে অফিসের দেয়া নাম্বারে ফোন দিলে সে নাম্বারটা অধিকাংশ সময় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। আবার অনেক সময় ফোন রিসিফ করে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের সাথে অসৌন্যমূলক আচরন করে বলে জানায়।
আমতলী পল্লী বিদ্যুৎ সাব- জোনাল অফিসের এজিএম মোঃ মোশাররফ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইনে সমস্যা থাকলে আমরা কি করবো। লাইনের সমস্যাগুলো সমাধান হলে এ সমস্যা আর থাকবেনা। প্রতিদিনই কি লাইনে সমস্যা থাকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি তার কোন উত্তর দিতে পারেননি। আর গ্রাহকদের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, গ্রাহক যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তার মিটার রিডিং দেখে সেই পরিমাণ বিলই তাদের দেয়া হয়।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী রাজ্জাকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, পটুয়াখালী থেকে আমতলীতে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনটি রয়েছে সেটি অনেক পুরাতন। মাঝেমধ্যে লাইনটি সংস্কার করার কারনে বিদ্যুৎ সরবারাহ বন্ধ রাখতে হয়। আবার লাইনের পাশে প্রচুর পরিমাণে গাছ থাকায় একটু ঝড় বা বাতাস হলে সেগুলো লাইনের উপড় পরে তার ছিড়ে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি ঘর্ণিঝড় ইয়াসে উপজেলার বিভিন্নস্থানে বিদ্যুতের লাইনের উপড় গাছ পড়ে তার ছিড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ২দিন ধরে পড়ে যাওয়া সেই গাছগুলো অপসারণ করে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। এখনো লাইনের অনেক জায়গায় সমস্যা রয়েছে। এ কারনে ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে। আশাকরি খুব শীঘ্রই এ সমস্যা দূর হয়ে যাবে।