খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর সুযোগ নেই - স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১০ এএম, ১০ মে,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৪১ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
আইন অনুযায়ী দন্ড মওকুফ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর কোনও সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, এ জন্য বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের আবেদন আমরা মঞ্জুর করতে পারিনি।
আজ রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে ৪০১ ধারায় দন্ড স্থগিত রেখে বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর সুবিধা মতো চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি বাসায় থেকে কিংবা সুবিধা মতো চিকিৎসা নিচ্ছেন। কয়েকদিন আগে করোনা আক্রান্ত হলে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে তাঁর ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার আরেকটি আবেদন করেন বিদেশে নেয়ার জন্য। সেটার আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখার জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। তারা মতামত দিয়েছেন, যে ধারায় তাঁর দন্ড স্থগিত রেখে চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হয়েছে সেটা পুনরায় বিবেচনা করে বিদেশে পাঠানোর কোনও সুযোগ নেই। তাই আমরা তাদের আবেদনটি মঞ্জুর করতে পারছি না।
গত ৫ মে রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেন তাঁর ভাই শামীম এস্কান্দার। এ সময় তিনি মন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসভবনে যান। সেখানে তিনি ওই আবেদনপত্র হস্তান্তর করেন। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আইন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়। গতকাল রবিবার সকালে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর আবেদনের নথি আইন বিভাগের সচিবের দফতর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মতামত সংবলিত নথিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। প্রসঙ্গত, বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে বিএনপি। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নির্ধারণের পাশাপাশি গুছিয়ে আনা হয়েছে পারিবারিক অন্যান্য প্রস্তুতিও। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য নিয়োজিত চিকিৎসকেরা দফায় দফায় তাঁর শারীরিক পরীক্ষা ও মানসিক অবস্থা নিরীক্ষা করছেন। তবে যেহেতু তিনি শর্ত সাপেক্ষে মুক্তিতে আছেন, এ কারণে সরকার অনুমতি দিলেই কেবল বিদেশে রওনা করতে পারবেন।
সোমবার (৩ মে) মধ্যরাত পর্যন্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বিএনপির উচ্চপর্যায়ে কয়েকজন ও বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিন মধ্যরাতে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ওনার চিকিৎসকেরা বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত না হওয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি নেই। আর একইসঙ্গে পারিবারিক ও দলীয়ভাবেও দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার কথা জোর দিয়ে বলা হয়েছে। ৩ মে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার দলের নেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে কথা বলেছেন। দলীয় সূত্র জানায়, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে বিদেশে নেয়ার আবেদন করার পর কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় সোমবার বিএনপি মহাসচিব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। বিশেষ করে, সোমবার বিকালে বেগম খালেদা জিয়াকে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে স্থানান্তর করার বিষয়টি অবহিত করেন। গত ২৭ এপ্রিল রাতে বেগম খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন বিএনপি প্রধানের চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। গত সোমবার বিকালে তাঁকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ১১ এপ্রিল বেগম খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওইদিন বিকালে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।