এখন দেশ নয়, বাজার দখল করতে হয় : পরিকল্পনামন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১৫ পিএম, ১৮ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:২৪ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, আগের জামানায় সবাই দেশ দখল করতো। ব্রিটিশ-জার্মানি-মোগলেরা আক্রমণ করে দেশ দখল করতো। এখন দেশ দখল করা লাগে না, বাজার দখল করতে হয়। আমাদেরও বাজার দখল করতে হবে।
আজ শুক্রবার বাপা ফুডপ্রো এক্সপোর অষ্টম আসর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মন্ত্রী। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হওয়া এ ফুডপ্রো এক্সপো চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপোর সভাপতি এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, বাপার সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এসএম জাহাঙ্গীর হোসাইন, বাপার সাবেক সভাপতি এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, এবারের আয়োজক কমিটির সদস্য মো. শহীদুল ইসলাম।
বিদেশের বাজার দখল করার আহ্বান জানিয়ে এম এ মান্নান বলেন, আমাদের ঘরের কাছে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিম বাংলা যেখানে আমাদের প্রভাব আছে ছাঁয়া আছে সেখানের বাজার দখল করতে হবে। এটা অন্যায় কিছু নয়। বাজার দখল করলেই কেল্লাফতে। খাদ্যের আবশ্যকীয়তা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, খাবার দিয়ে জীবন শুরু আবার খাবার দিয়েই শেষ। জীবনের প্রথম লগ্নের মায়ের দুধ ও অথবা একটু পানি দিয়ে শুরু হয়। কিন্তু যখন পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় তখন সেই খাবারকে ত্যাগ করেই চলে যায়। খাবার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয় এটা নিয়ে কারোর মধ্যে মতভেদ নেই। যতই কবিরা বলুন না কেন আমরা সবুজ সুফলা, শষ্য শ্যামলা। তবে ইতিহাসের লোকেরা বলেন আমরা মোটামোটি অভাবের মধ্যেই বড় হয়েছি।
মন্ত্রী আরও বলেন, খাবার আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চালের দাম যদি বাড়ে আমাদের হাত পা কাপে, চালের দাম কমলে আমরা স্বস্তি পাই। এক সময় খাদ্য নিয়েই সরকারের আসা যাওয়া বা উত্থান-পতন ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে খাবারের অভাব নেই। জনসংখ্যা বেড়েছে কিন্তু খাবারের কোনো সমস্যা নেই। কোন ম্যাজিক নয়, মানুষজনের পরিশ্রম, উদ্ভাবনী শক্তির কারণেই খাবারের উৎপাদন বেড়েছে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে আমরা বছরে ৪ কোটি টন খাদ্য উৎপাদন করি। এ প্রথমবারের মতো আমরা বলতে পারি কোনো মানুষ না খেয়ে থাকে না। আমাদের বাংলায় কোনো মানুষ না খেয়ে নেই। খাদ্য উৎপাদনে আমাদের সরকারের আমলে বহুমাত্রিক পরিবর্তন হয়ে গেছে। খাদ্য, কাপড়, পানি, বিদ্যুৎ, শিক্ষার ব্যাপারে সরকার খুবই সচেতন। জনগণ বাহবা দিলে খুশি না দিলেও আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা করতে পারবো আমরা অনেক কিছু করেছি। খাদ্য উৎপাদন ও প্রসেসিংয়ে বাপা ফুডপ্রো এক্সপো অগ্রগামী সৈনিক। শুধু খাবার উৎপাদন নয়, খাবার সংরক্ষণ ও পরিবেশনেও বাপা ফুডপ্রো এক্সপো দারুণ ভূমিকা পালন করছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে বাপা এক্সপো ও সরকারের অবদান আছে। সরকারের কাজ আপনাদের সহায়তা করা। আমরা নীতিগত আর্থিক ও প্রণোদনা দিয়ে আপনাদের সহায়তা করবো। পরিকল্পনা, অর্থ, খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় আপনাদের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এম এ মান্নান বলেন, সাম্প্রতিককালে হাইজিন (ওয়াশ) ব্যাপারটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শুধু খাবার দিলেই হবে না। স্বাস্থ্যগতভাবে গ্রহণযোগ্য খাবার দিতে হবে। খাবারে সামান্য উল্টা-পাল্টা হলে আপনি কিন্তু টিকতে পারবেন না। চিংড়ি মাছের ওজন বাড়াতে কে যেন কোথায় একটু লোহা দিয়েছিল এটা নিয়ে বর্হিবিশ্বে আমাদের সুনাম নষ্ট হয়েছে যা এখনও উদ্ধার হয়নি। তাই শুধু খাদ্য বিপণন, পরিবেশন নয় মানসম্মত খাদ্য দিতে হবে। এ কাজগুলো করতে বাপা ফুডপ্রো এক্সপো অগ্রগামী ভূমিকা রাখবে।