সকলকে সাশ্রয়ী সতর্ক ও মিতব্যয়ী হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৭ পিএম, ৭ নভেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:২০ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক যে মন্দা দেখা দিয়েছে তার জন্য সকলকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সকলকে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে, সতর্ক ও মিতব্যয়ী হতে হবে। নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে। তেল, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করতে হবে। যেখানে খালি জমি আছে, যত বেশি পারবেন খাদ্য উৎপাদন করবেন। দেশের ২৫ জেলায় নির্মিত ১০০ সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ সোমবার সকালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ফল, তরকারি, যেটাই পারেন, উৎপাদন করবেন। হাঁস-মুরগি, ছাগল, ভেড়া পালন করবেন। নিজেদের উপার্জন নিজেদের করার চেষ্টা করতে হবে। যাতে বিশ্বব্যাপী মন্দার ধাক্কা বাংলাদেশে বেশি ক্ষতি করতে না পারে। আন্তর্জাতিকভাবে খাদ্যের যে অভাব দেখা দিচ্ছে, সেই অভাব থেকে বাংলাদেশের মানুষ যেন মুক্ত থাকে, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা। সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশটাকে উন্নয়নের জন্য আমরা ২০২১ রূপকল্প ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেটাই লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করা। একই সাথে শত সেতু নির্মাণ করা এবং তার উদ্বোধন করা আশ্চর্যের বিষয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেখানে মোবাইল ফোনও ছিল না, মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না, আমরা সেটাও তৈরি করে দিয়েছি। আমরা গতকাল একই সাথে সমস্ত বাংলাদেশের যোগাযোগ করে এই সেতু উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা সিলেট ও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করে দিয়েছি। এখন কক্সবাজার বিমানবন্দরের কাজ চলছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সমগ্র বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। করোনা ভাইরাস, তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে শুধু আমাদের না, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। এর মাঝেও সেতুগুলো নির্মাণ করে কাজ যে সম্পন্ন করেছে, সেজন্য যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং সেতুর কাজের সাথে যারা সম্পৃক্ত ছিল তাদের ধন্যবাদ জানাই। ডেঙ্গুর বিষয়ে সতর্ক থাকার নিদের্শ দিয়ে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নিজেদের সতর্ক থাকতে হবে। মশারি টানিয়ে শোয়ার ব্যবস্থা অথবা কোথাও যেন পানি না থাকে। মশার প্রজনন জায়গাগুলো ধ্বংস করে দেয়া, নিজেদের সুরক্ষা নিজেদেরই করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে যা করার আমরা তা করব। আপনাদের পাশে আমরা আছি। সারা বাংলাদেশের উন্নয়নটাই আমাদের লক্ষ্য। জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নের কাজ করে। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে সেতুগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। অনুষ্ঠানে সেতুগুলোর ওপরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। সরকার ৮৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব সেতু নির্মাণ করেছে। সেতুগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৫টি, সিলেট বিভাগে ১৭টি, বরিশাল বিভাগে ১৪টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬টি, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী ও রংপুরে পাঁচটি করে, ঢাকায় দুটি ও কুমিল্লায় একটি সেতু রয়েছে।