সিরাজগঞ্জের মেছড়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোটের ফলাফল তদন্তের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৫ পিএম, ১৩ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৩১ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার মেছড়া ইউপি নির্বাচনের দেওয়া একটি কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে দায়ের এক রিটের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মূলতবি ঘোষণা করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ( ১১ জানুয়ারি) ইউপি নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের করা এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি জাফর আহমেদ এবং বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান রিটকারীর আইনজীবীর ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি জানান, মেছড়া ইউপি নির্বাচনের একটি ভোট কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণাকে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এ বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেছি। পরে আদালত রিটের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য স্ট্যানওভার (মুলতবি) করেছেন। তদন্ত আশানুরুপ না হলে আমরা পরবর্তি আইনী পদক্ষেপে যাব।
রিটের বিবরণ থেকে জানা যায়, মেছড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩৬৫ ভোটে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। পরবর্তিতে ফলাফল পরিবর্তন করে ২২৪ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মজিদকে। এমন ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে চলতি সপ্তাহে রিট করেন জাহাঙ্গীর আলম। গত বুধবাদ ৫ জানুয়ারি ওই ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
পরে শুক্রবার জাহাঙ্গীর আলম এক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন 'দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বিশেষ গোষ্ঠীর প্রভাবে নৌকার প্রার্থী আব্দুল মজিদকে বিজয়ী করতে ফলাফল কারসাজির নাটক করেছেন।' এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আগের তালিকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ৩৬৫ ভোটে জিতলেও রিটার্নিং কর্মকর্তার নতুন ফলাফলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মজিদ ২২৪ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন।
তেঘরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষে বুধবার সন্ধ্যায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এশারত আলীর প্রাথমিক ঘোষণায় নৌকার প্রার্থী আব্দুল মজিদ পান ১৮৫ ভোট, জাহাঙ্গীর আলম (চশমা) পান ৪২৯ ভোট।
এই ইউনিয়নের মোট ভোটার ২ হাজার ৪১৪ জন, বৈধ ভোট ১ হাজার ৭৭৪, বাতিল ৬, অনুপস্থিতি ৬৩৪। ভোটার উপস্থিতি ৬৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তেঘরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র বাদে ওই ইউনিয়নের ১০টি কেন্দ্রের প্রাথমিক ফলাফলে নৌকার প্রার্থী আব্দুল মজিদ পান ২ হাজার ৭৩১ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম পান ২ হাজার ৮৫২ ভোট। ফলাফলে ৩৬৫ ভোটের ব্যবধানে সেদিন বিজয়ী হন জাহাঙ্গীর আলম।
কিন্তু প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এশারত আলীর গরমিলের দ্বিতীয় তালিকাসহ রিটার্নিং কর্মকর্তার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার চূড়ান্ত ঘোষণায় মেছড়ায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মজিদ পান ৩ হাজার ৫০৫ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম পান ৩ হাজার ২৮১ ভোট। এরমধ্যে তেঘরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা ৭৭৪ ভোট এবং চশমা ৪২৯ ভোট। কেন্দ্রটিতে বৈধ ভোট ২ হাজার ২৭৫। সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী নৌকার প্রার্থী আব্দুল মজিদ ২২৪ ভোটে বিজয়ী দেখানো হয়ে।
এমন ঘোষনায় এরপর জাহাঙ্গীর আলম সংক্ষুব্ধ হয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। প্রতিকার না পেয়ে পরবর্তীতে তিনি রিট আবেদননটি দায়ের করেন।।