মুজিববর্ষে জাতিসংঘে বৃক্ষরোপণ করা একটি বিরল সম্মাননা : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৪ এএম, ৫ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৩৬ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই সফরের একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে একটি স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন এবং একটি শতর্বষী বৃক্ষরোপণ। জাতিসংঘের সদর দপ্তর চত্বরে কোনো রাজনৈতিক নেতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এ ধরনের উদ্যোগ এটিই প্রথম। বাংলাদেশের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি বিরল সম্মাননা।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ (ইউএনজিএ)-এর ৭৬তম অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা ও এর স্থায়ী সমাধানের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়, যা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখবে বলে আমি আশা করি।’
আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাম্প্রতিক জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
বিকেলে গণভবনের ব্যাংকুয়েট হলে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেন এবং সাংবাদিকদের অপর একটি অংশ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে উপস্থিত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংযুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট সম্পর্কে আমি আবারও বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করিয়ে দেই যে, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সৃষ্টি মিয়ানমারে, সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে। রাখাইন রাজ্যে তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই কেবল এ সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে বলে উল্লেখ করে আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘৭৬তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সক্রিয় অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান যেমন সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউইয়র্কে অবস্থানকালে আমার অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের মূল সভা ও সাইড ইভেন্ট মিলিয়ে আমি সর্বমোট ১০টি সভা এবং ৮টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেই। এছাড়া ৭৬তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্ক পর্বের উদ্বোধনী দিনেও আমি যোগদান করি।’
কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে ‘প্রত্যাশা’-কে উপজীব্য করে এবারের অধিবেশনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল মহামারি থেকে টেকসই উত্তরণ। এছাড়া কোভিড-১৯ টিকার সর্বজনীন প্রাপ্যতা, সহজলভ্যতা ও মহামারি থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার স্বভাবতই আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি, বর্ণবাদ, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট তথা এসডিজি, পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ ইত্যাদি বিষয়ও আলোচনায় উঠে এসেছে, বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সফরের প্রথম দিনে ২০ সেপ্টেম্বর ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলুশ্যন্স নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন)-এর পক্ষ থেকে ২০১৫-২০২০ সময়কালে এসডিজি অর্জনে সর্বোচ্চ সাফল্যের জন্য আমাকে এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার প্রদান করা হয়। এসডিএসএন-এর প্রেসিডেন্ট প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ প্রফেসর জেফ্রি স্যাক্স আমার হাতে এই সম্মাননাটি তুলে দেন। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ যে অবিচলভাবে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে- এই পুরস্কার তারই বিশ্ব স্বীকৃতি। আমি আমার ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যে দেশের জনগণকে এই পুরস্কার উৎসর্গ করি।’