জনপ্রশাসন পদক পেলেন ৩৫ কর্মকর্তা-প্রতিষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫২ এএম, ২৮ জুলাই,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৩০ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সৃজনশীল কাজে আরও উৎসাহিত করতে ৩২ জন সরকারি কর্মকর্তা (দলগত ক্ষেত্রের সবাইকেসহ) ও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ২০২১ ও ২০২০ সালের জনপ্রশাসন পদক দিয়েছে সরকার।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মনোনীতদের কাছে পদক তুলে দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। ‘জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা, ২০১৫ (সংশোধিত-২০১৬)’ অনুযায়ী, জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে দুটি ক্ষেত্রে (সাধারণ ও কারিগরি) শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি, শ্রেষ্ঠ দল ও শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান শ্রেণিতে এ পুরস্কার দেয়া হয়। জাতীয় পর্যায়ে ব্যক্তিগত শ্রেণিতে (সাধারণ ক্ষেত্র) জনপ্রশাসন পদক-২০২১ পেয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জিয়াউর রহমান। তিনি মোটরযানের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজ করার কাজের জন্য এই পদক পান। ইউনেস্কোতে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের আন্তর্জাতিকীকরণের লক্ষ্যে অভিযোজিত প্রশাসনিক ও কূটনৈতিক তৎপরতার জন্য দলগত শ্রেণিতে (সাধারণ) পদক পেয়েছেন ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজী ইমতিয়াজ হোসেন ও তার দল। ঢাকাই মসলিন পুনরুদ্ধার করে পদক পায় বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের অধীন বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিন সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার প্রকল্প। পরিবার পরিচিতি কার্ডের জন্য ব্যক্তিগত (কারিগরি) শ্রেণিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, ডিজিটাল পদ্ধতিতে কোম্পানি নিবন্ধনের কাজের জন্য দলগত (কারিগরি) শ্রেণিতে যৌথ মূলধন কোম্পানি বা ফার্মসমূহের পরিদফতরের তৎকালীন নিবন্ধক (বর্তমানে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব) মো. মকবুল হোসেন ও তার দল এবং পেনশন ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশনের জন্য অর্থ বিভাগ প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণিতে (কারিগরি) পদক পেয়েছে। জেলা পর্যায়ে কন্যারত্নের (বাল্য বিবাহ রোধ, নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী ক্ষমতায়ন সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ) জন্য ব্যক্তিগত শ্রেণিতে (সাধারণ) পঞ্চগড়ের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন (ব্যক্তিগত) এবং দলগত শ্রেণিতে (সাধারণ) খুলনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন ও তার দল যৌনপল্লিতে জন্ম নেয়া সমাজচ্যুত শিশুদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার জন্য এই পদক পান। ২০২০ সালের জনপ্রশাসন পদক পান দলগত শ্রেণিতে (সাধারণ) গাজীপুরের কাপাসিয়ার উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রহিম ও তার দল। ‘মাতৃমৃত্যু মুক্ত কাপাসিয়া মডেল’ এর উদ্ভাবক হিসেবে তাদের এই পদক দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ওই বছরের জেলা পর্যায়ে ব্যক্তিগত শ্রেণিতে (সাধারণ) তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও পুনর্বাসনের জন্য পদক পেয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন। দলগত শ্রেণিতে (সাধারণ) নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. হারুন-অর রশীদ ও তার দল পিপিপি অনুসরণ করে আধুনিক মানের সুইমিংপুল, জিমনেশিয়াম ও মিনি লাইব্রেরি স্থাপনের জন্য পদক পেয়েছেন। টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে ঢাকার ডিসি) মো. শহীদুল ইসলাম ও তার দল টাঙ্গাইলে বধ্যভূমি সংস্কার ও নবরূপে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য এই পদক পেয়েছেন। ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ স্লোগান বাস্তবায়নে ‘মনাই ত্রিপুরা পাড়া মডেল’ এর জন্য ২০২০ সালে প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণিতে (সাধারণ) হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় এই পদক পেয়েছে। প্রতি বছর ‘জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস’র অনুষ্ঠান উদযাপনের অংশ হিসেবে এই পদক দেয়া হয়। প্রতিবছর দিবসটি ২৩ জুলাই পালন করা হলেও করোনার সংক্রমণ ও ঈদের ছুটির কারণে এবার নির্ধারিত তারিখে তা পালন করা যায়নি। ২০১৬ সালের ২৩ জুলাই প্রথমবারের মতো জনপ্রশাসন পদক দেয়া হয়। জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কারপ্রাপ্তরা ১৮ ক্যারেট মানের এক ভরি ওজনের স্বর্ণপদক, সার্টিফিকেট এবং নগদ অর্থ। ব্যক্তিগত অবদানের ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক, সার্টিফিকেট এবং জনপ্রতি ১ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। দলগত অবদানের জন্য স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও নগদ সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়। জেলা পর্যায়ে ব্যক্তিগত অবদানের জন্য ৫০ হাজার টাকা ও সম্মাননাপত্র, দলগতভাবে অবদানের জন্য সম্মাননাপত্র ও সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা দেয়া হয়।