চিঠি দিয়ে ইসির কাছ থেকে এনআইডি নেয়া যাবে না, আলোচনায় বসতে হবে সরকারকে - সিইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪৬ এএম, ২৪ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৪১ পিএম, ১০ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
চিঠি দিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছ থেকে এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়া যাবে না, আলোচনায় বসতে হবে সরকারকে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
নুরুল হুদা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা টেবিল-চেয়ার না যে, উঠিয়ে নিয়ে গেলাম। এটা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে। সেখানে আমাদের আরও যে যুক্তি আছে সেগুলো তুলে ধরবো। এরপর সরকার কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে না নেবে এটা তো পরের কথা।
এনআইডি সেবা হস্তান্তরের প্রজ্ঞাপন হয়ে গেলেও আলোচনার সুযোগ থাকছে কি-না এ বিষয়ে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, থাকছে। অনেক বড় প্রতিষ্ঠান তো এটা। কিভাবে নেবে, না নেবে এ বিষয়ে অবশ্যই আলোচনা হবে। এটা তো টেবিল-চেয়ার না যে, উঠিয়ে নিয়ে গেলাম। বসতে হবে। এই কথা তো আমি বলেছি অনেকবার যে, কমিশন চায় এনআইডি আমাদের কাছে থাকুক।
এনআইডি সেবা চলে গেলে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে কি-না এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের অসুবিধা হবে। নিশ্চয়ই সচিব পর্যায়ে এ বিষয়ে কথাবার্তা হবে। আমাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো তাদেরকে জানাবো।
নির্বাচন কমিশন থেকে এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছিল তার উত্তরে তারা কী বলেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, তারা শুধু বলেছেন যে, আগের সিদ্ধান্তেই আছেন। এটার ওপরে অনেক কাজ। আমাদের সাথে ওনারা বসবেন, অবকাঠামো নিয়ে হিসাবপত্র আছে সেগুলো নিয়ে প্রক্রিয়া আছে তার ওপরে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা তো আমাদের অবস্থান অনেক আগেই বলেছি।
সিইসি আরও বলেন, সরকারের কাছে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত হয়েছে এরকম বলা যায় না। তারা নিতে চায়, আমরা দেবো না এরকমও বলা যায় না। সেই রকম অবস্থানে আমরা নেই। আমাদের বসতে হবে তাদের সঙ্গে এটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ কথা। বসে আমাদের যে অবস্থান আছে সেটা তাদেরকে বুঝাবো, সিদ্ধান্ত কী হবে তখনকারটা তখন দেখা যাবে। এখন তো আগেই বলা যাবে না।
সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে কমিশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেবিনেট তো আমাদের কাছে উচ্চ পর্যায়। কেবিনেট থেকে আমরা চিঠি পেয়েছি। তাদেরকে আমরা উত্তর দিয়েছি। আমরা এই পর্যায়ে আছি। তারা যদি এ বিষয়ে আমাদের কাছে মতামত অথবা পরামর্শ বা তারা কী করতে চায় সেটা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনের সচিবের সাথে বসে তখন আমাদের বক্তব্য তুলে ধরা হবে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, সরকার কী যুক্তিতে চায় তাদের অবশ্যই কিছু যুক্তি আছে। আমাদেরও কিছু যুক্তি আছে, এগুলো নিয়ে ডায়লগ হবে। তাদের বক্তব্য হলো- এই সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে না এবং সেই যুক্তিটা ঠিক। আসলেই অন্যকোনো দেশে এটা থাকার বিষয় না। আর আমাদের যুক্তি হলো- এই কাজটা আমাদের অনেক পরিশ্রমের ফসল। এই কাজটা করার জন্য আমাদের কয়েক হাজার নিবেদিত কর্মী তৈরি হয়েছে এবং তারা অত্যন্ত প্রফেশনাল। এতদিনের ভুল-ভ্রান্তি শেষে সব পেরিয়ে অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তি সম্পন্ন কাজ তারা তৈরি করতে পেরেছে। এটার জন্য নির্বাচন কমিশন গর্ববোধ করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলেছিলাম যে, এতগুলো লোক আবার তৈরি করা, আবার ১২ বছর ঘুরে অন্যকোনো ডিপার্টমেন্টের পক্ষে সম্ভব না। তাদের যুক্তি হলো- সরকারের জিনিস তারা নিয়ে যাবে। তোমরা তো সরকার না। আমরা বলি, আমরা সরকার না কিন্তু সরকারের যখন যা দরকার হয়, আমরা সরকারের সেসব সেবা দিতে পারি।