৫৫,৩১০ জনকে অবৈধ ভোটার করায় ইসির পরিচালকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৬ এএম, ১৭ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৫১ এএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
২০১৫ সালের হালনাগাদ ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাসহ ৫৫ হাজার ৩১০ জনকে অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে মামলার আসামি হয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালকসহ ইসির ৪ কর্মকর্তা- কর্মচারী। ঘটনার সময় তারা সকলেই চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন।
আজ বুধবার দুপুরে দুদক জেলা কার্যালয় ২-এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম ২-এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন।
মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার বর্তমানে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক খোরশেদ আলম, জেলা নির্বাচন অফিসের সাবেক উচ্চমান সহকারী মাহফুজুল ইসলাম, সাবেক অফিস সহায়ক রাসেল বড়ুয়া, পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন অফিসের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট মোস্তাফা ফারুক।
দুদক সূত্র জানায়, মিরসরাই উপজেলায় ব্যবহার করার জন্য চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের সাবেক অফিস সহায়ক রাসেল বড়ুয়া ২১ অক্টোবর ২০১৫ সালে পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন অফিসের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট মোস্তাফা ফারুককে একটি ল্যাপটপসহ বিভিন্ন মালামাল হস্তান্তর করেন। তিনি এসব মালামাল গ্রহণ করে মিরসরাইয়ে নিয়ে যান। পরবর্তীতে এসব মালামাল ফেরত আসার কথা অফিশিয়ালি স্বীকারও করা হয়। তবে ল্যাপটপটি হালনাগাদে বিভিন্ন উপজেলায় ব্যবহৃত হয়েছে মর্মে বলা হলেও ল্যাপটপটির সর্বশেষ অবস্থান সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসকে রাসেল বড়ুয়া ও মাহফুজুল ইসলাম হদিস দিতে পারেননি। মূলত এই ল্যাপটপ ব্যবহারের মাধ্যমে তারা অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় ৫৫ হাজার ৩১০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করেন।
পরবর্তীতে ল্যাপটপের সন্ধানে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণসহ তদন্ত হলেও তৎকালীন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খোরশেদ আলম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরণ কাজে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিকরণে ব্যবহৃত বিশেষায়িত সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত ল্যাপটপটি উদ্ধারের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এমনকি উক্ত বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে না এনে তিনি দোষীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন। ল্যাপটপটি গায়েব হয়ে যাওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি না করে তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করে একে অপরের সহযোগিতায় ল্যাপটপটি আত্মসাৎ করেছেন। পরবর্তীতে আত্মসাৎকৃত উক্ত ল্যাপটপসহ কয়েকটি ল্যাপটপ ব্যবহার করে রোহিঙ্গাসহ মোট ৫৫ হাজার ৩৯০ জনকে অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন।
তারা মূলত একে অপরের যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার আশ্রয়ে ভুয়া পরিচয়, নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে দন্ডবিধির ২০১/৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয় মামলায়।