সিরিজের প্রথম ম্যাচে সহজ জয় নিউজিল্যান্ডের
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:৩৭ পিএম, ২০ মার্চ,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:২৫ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের সময় উইকেট বোলিংবান্ধব। প্রতিপক্ষের ব্যাটিংয়ের সময় সে উইকেট-ই কি না ব্যাটিংবান্ধব! এ পুরোনো রসিকতা।
কিন্তু বাংলাদেশ দল খেলতে নামলে এই পুরোনো কথাই রসিকতার নির্মম চাবুক হয়ে কশাঘাত করে। আজও সেটিই হলো ডানেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে।
ইউনিভার্সিটি ওভালে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪১.৫ ওভার পর্যন্ত টিকেছে বাংলাদেশের ইনিংস। স্কোরবোর্ডে রান উঠেছে ১৩১। এই রান তাড়া করতে নেমে প্রথম পাঁচ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৫২।
পার্থক্য আর কিছুই না, পেসবান্ধব উইকেটে খেলায় দুই দলের ব্যাটসম্যানদের সামর্থ্যের ফারাক। ২১.২ ওভারেই নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটের জয় তুলে নেওয়ার পর এই নির্মম সত্যটা আরও বেশি করে ফুটে উঠেছে।
এ ছাড়া সিরিজ শুরুর আগে পেসারদের নিয়ে আশার কথা বলেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রথম ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ড ওপেনারদের শুরুটা কিন্তু তাঁর আশার পক্ষে কথা বলে না। অবশ্য ১৩১ রানের পুঁজি নিয়ে বোলারদের পক্ষে লড়াই করাটাও কঠিন ছিল।
ষষ্ঠ ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে মার্টিন গাপটিল (১৯ বলে ৩৮) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৫৪ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। এ সময় দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও হাসান মাহমুদকে রীতিমতো শাসন করে গেছেন গাপটিল।
একটু বাউন্সি উইকেটে ক্রিকেটীয় শট খেলেই কীভাবে উড়িয়ে মারা যায় তা দেখিয়েছেন এই কিউই ব্যাটসম্যান। তামিম-লিটন চাইলে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে তা দেখে নিতে পারেন।
তরুণ হাসান মাহমুদ দেখতে পারেন তাসকিনকে। বাংলাদেশ শিবির থেকে বলা হয়েছিল অনুশীলন ম্যাচগুলোয় দারুণ করেছেন এ পেসার। কথাটা যে মিথ্যে নয় তা বোঝা গেল দলের একমাত্র পেসার হিসেবে কিউই ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে তাসকিনের সমীহ আদায় করে নেওয়ায়।
গতি ও বাউন্সের মিশেলে দারুণ কিছু ডেলিভারি থেকে আরও উইকেট পেতে পারতেন তাসকিন। দূভার্গ্য, ব্যাটসম্যানরা লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দিতে পারেননি বোলারদের। তিন পেসারের মধ্যে শুধু তাসকিনের মধ্যেই দেখা গেল এই স্বল্প পুঁজি নিয়েও আগ্রাসন দেখানোর চাহনি।
গাপটিল আউট হওয়ার পর নিউজিল্যান্ডকে বাকি পথের অনেকটা এগিয়ে দেন হেনরি নিকোলস ও ডেভন কনওয়ে। দ্বিতীয় উইকেটে ৯০ বলে তাদের ৬৫ রানের জুটি গড়েন তারা। তবে দলের এই নিঃশর্ত আত্মসমর্পনে অভিষিক্ত মেহেদী হাসানকে দেখে পরের ম্যাচগুলোর জন্য কিছুটা আশ্বস্ত হতে পারেন অধিনায়ক তামিম।
পেসবান্ধব উইকেটেও স্পিনে লাইন-লেংথে শৃঙ্খলতার পরিচয় দেন এই অলরাউন্ডার। নইলে নিউজিল্যান্ড আরও দ্রুত জয় তুলে নিতে পারত। মেহেদী হাসান মিরাজও ভালো বল করেছেন, কিন্তু এই মেহেদীই নজর কেড়েছেন বেশি।
হাসান মাহমুদ নিজের লাইন-লেংথ খুঁজে পেতে হয়রান হয়েছেন। পুঁজিটা যেহেতু স্বল্প তাই মার খাওয়ায় কষ্টটা হয়েছে আরও বেশি। নিউজিল্যান্ড জয় থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে তাঁকে উইকেট দেন কনওয়ে (৫২ বলে ২৭)।
অভিষিক্তি উইল ইয়ং ও নিকোলস মিলে নিউজিল্যান্ডের বাকি পথটুকু পার করেন। ৫৩ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন নিকোলস।
ম্যাচে মোট ছয় বোলার ব্যবহার করেছেন তামিম। ৪ ওভারে ২৬ রানে উইকেটশুন্য ছিলেন মোস্তাফিজ। ওভারপ্রতি গড়ে দশের বেশি রান দিয়ে সবচেয়ে খরুচে হাসান। ৪ ওভারে ৪১ রানে ১ উইকেট নেন তিনি। কোনো উইকেট না পেলেও ৬ ওভারে মাত্র ১৭ রান দেন মেহেদী। ৪ ওভারে ২৩ রানে ১ উইকেট নেন তাসকিন।
দ্বিতীয় ওয়ানডে মঙ্গলবার। সিরিজে টিকে থাকতে সে ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের। সেজন্য ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বই সবচেয়ে বেশি, অন্তত প্রথম ম্যাচের স্কোরকার্ড তাই বলে। সিরিজে আপাতত ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড।