পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ এনে বিসিবিতে জাহানারার চিঠি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:০৯ পিএম, ১১ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১২:০৬ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
৮ জানুয়ারি কমনওয়েলথ গেমস নারী ক্রিকেটের বাছাইপর্ব খেলতে মালয়েশিয়ায় গেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। সফরে অভিজ্ঞ পেসার জাহানারা আলমকে রাখা হয়েছে স্ট্যান্ডবাই তালিকায়, ১৫ সদস্যের দলের সঙ্গে তাই যাওয়া হয়নি তাঁর। জাহানারার ১৫ সদস্যের দল থেকে বাদ পড়ার কারণটাও রহস্যাবৃত। শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে গুঞ্জন থাকলেও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি বিসিবি।
কিন্তু আসলেই কি জাহানারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন নাকি কারও ব্যক্তিগত অপছন্দের কারণে বাদ পড়লেন? প্রশ্নটা তুলে দিচ্ছে দলের বিভিন্ন বিষয়ে নিজের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বিসিবিকে আগেই দেওয়া জাহানারার একটি চিঠি। গত নভেম্বরে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে এবং এরপর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও জাহানারার যে রকম পারফরম্যান্স, সেটি অন্তত দল থেকে বাদ পড়ার মতো নয়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে দুই ম্যাচে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। এরপর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নেন ৪ উইকেট।
কমনওয়েলথ গেমস নারী ক্রিকেটের বাছাইপর্বের দল থেকে জাহানারা তাহলে কেন বাদ, সেই প্রশ্নের উত্তরে দল ঘোষণার পর বিসিবির নারী ক্রিকেটের নির্বাচক ও জাতীয় দলের সাবেক পেসার মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছিলেন, নতুনদের সুযোগ দিতেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত। কিন্তু দল ঘোষণার আগেই বিসিবির কাছে জানানো জাহানারার অভিযোগ অন্য আভাসই দিচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, জিম্বাবুয়ে থেকে ফেরার পর বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীকে দেওয়া দীর্ঘ চিঠিতে নির্বাচক মঞ্জুরুল ও কোচ এ কে এম মাহমুদুল ইমনের বিরুদ্ধে দলের কোনো কোনো ক্রিকেটারের প্রতি বিশেষ পক্ষপাতের অভিযোগ এনেছেন জাহানারা। একই সঙ্গে অভিযোগ করেছেন তাঁর প্রতি হওয়া বিভিন্ন অন্যায় আচরণেরও। গত বছরের এপ্রিলে সিলেটে অনুষ্ঠিত নারী দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প থেকে শুরু করে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফর পর্যন্ত অনুশীলন এবং ড্রেসিংরুমের অনেক ঘটনা সম্পর্কেই জাহানারা বিসিবিকে তাঁর পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।
চিঠির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে গতকাল জাহানারার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি, জবাব দেননি খুদে বার্তারও। মুঠোফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি নির্বাচক মঞ্জুরুলকেও। কোচ ইমন বলেছেন, বিসিবির কাছ থেকে অভিযোগের বিষয়ে জেনে তারপর এ নিয়ে মন্তব্য করবেন। তবে জাহানারার কাছ থেকে এ রকম একটি অভিযোগপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।
গতকাল তিনি বলেন, ‘জাহানারার মতো একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার যখন কিছু বলেন, আমরা সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখি। আগেও তাই হয়েছে। এবারও আমরা তাঁর কথা গুরুত্বসহকারে নিচ্ছি। যেসব বিষয়ে তিনি আমাদের জানিয়েছেন, সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে।’
জাহানারার অভিযোগগুলো কী নিয়ে, সে ব্যাপারে অবশ্য বিস্তারিত বলতে রাজি হননি বিসিবির প্রধান নির্বাহী। তবে বলেছেন, ‘মূলত খেলা এবং অনুশীলনসংক্রান্ত কিছু ক্রিকেটীয় বিষয়েই তিনি নিজের মতামত জানিয়েছেন।’
জাহানারাকে মালয়েশিয়া সফরের দল থেকে বাদ দেওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর ব্যাখ্যা, ‘আমি বলব না শুধু শৃঙ্খলাজনিত কারণে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পারফরম্যান্স, নতুনদের সুযোগ দেওয়াসহ বেশ কিছু কারণেই তিনি দলে নেই। তবে তার মানে এই নয় যে জাহানারা আর দলে ফিরবেন না। হয়তো সামনেই আবার তাঁকে দলে দেখা যাবে।’
বোর্ডের একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, সিলেটের অনুশীলন ক্যাম্প থেকেই টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে নারী দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের। জাহানারাকে দল থেকে বাদ দিয়ে তাঁদের সবাইকেই একটা বার্তা দিতে চেয়েছে বিসিবি।
শুধু জাহানারাই অবশ্য নন, নারী দলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে কাজ করেছেন, কোচিং স্টাফের এমন কয়েকজন সদস্যকেও সম্প্রতি দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আছেন সিলেটের প্রস্তুতি ক্যাম্পের ফিল্ডিং কোচ ফয়সাল হোসেন এবং সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরেও দলের সঙ্গে থাকা কম্পিউটার বিশ্লেষক শামস শাওন।