কয়লা ব্যবহার বন্ধে ১৯০ দেশের প্রতিশ্রুতি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২১ এএম, ৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৩৬ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কার্বন ও গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ রোধে এবং পরিবেশের জন্য বিপর্যয়কর কয়লা প্রধান জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বের ১৯০টি দেশ ও সংস্থা।
আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো শহরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলনে (কপ২৬) ১৯০টি দেশ ও সংস্থা অঙ্গীকারপত্রে এই মর্মে স্বাক্ষর করেছে যে, তারা নিজেদের দেশে নতুন কোনো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করবে না। তার পরিবর্তে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। স্বাক্ষরকারী দেশগুলো আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে বর্তমানে যেসব কয়লা প্রকল্প চালু আছে, ধীরে ধীরে সেগুলোকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে রূপান্তর করা হবে। আন্তর্জাতিক পরিবেশবিদদের মতে, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে কয়লা। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রতি বছর যে পরিমাণ কার্বন ও গ্রিনহাউস গ্যাস মেশে, তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উৎস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলমান কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো। পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও চিলির মতো অনেক উন্নয়নশীল ও মধ্যম আয়ের দেশ, যাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন বহুলাংশে কয়লানির্ভর, স্বাক্ষর করেছে কপ২৬ অঙ্গীকারপত্রে। তবে এতে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থেকেছে বিশ্বের কয়েকটি বৃহৎ অর্থনীতির দেশ- অস্ট্রেলিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত।
কপ২৬ প্রতিশ্রুতিপত্র অনুযায়ী, স্বাক্ষরকারী বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের চলমান কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে রূপান্তরিত করবে। উন্নয়নশীল ও মধ্যম আয়ের দেশসমূহের জন্য এই সময়সীমা ধরা হয়েছে ২০৪০ সাল। জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার বন্ধের এই প্রতিশ্রুতিতে এত দেশ স্বাক্ষর করায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে কপ২৬ সম্মেলনের আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য। দেশটির বাণিজ্য ও জ্বালানিমন্ত্রী কোয়াসি কাওয়ারট্যাং এ বিষয়ে বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন যুগের শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। ‘বিশ্ব সঠিক পথে এগোচ্ছে। সেই দিন খুব দূরে নয়, যেদিন এই পৃথিবী থেকে সব কয়লাভিত্তিক প্রকল্প উঠে যাবে এবং গোটা বিশ্বে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার শুরু হবে। বৃহৎ অর্থনীতির কয়েকটি দেশ অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর না করায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তবে আশা জানিয়েছেন, তারাও ‘শিগগির’ স্বাক্ষর করবে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে তুলনায় বিশ্বজুড়ে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে; কিন্তু তারপরও, এখন পর্যন্ত বিশ্বের মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৩৭ শতাংশই আসে কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলো থেকে।