বিডিবিএল এ আওয়ামীপন্থী ডিএমডিদের নেতৃত্বে পদোন্নতি বাণিজ্য
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:৫১ পিএম, ১২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ১২:৪০ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের ন্যায় সরকারি এ ব্যাংকেও অনিয়ম-দূর্নীতি ও দলীয়করণের ফলে ক্রমান্বয়ে অনিয়ম ও দলীয়করণের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি (বিডিবিএল) এ আওয়ামীলীগের দোসররা এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে।
বিডিবিএল এর দুই ডিএমডি জনাব শচীন্দ্র নাথ সমাদ্দার যিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি; অপর ডিএমডি পরিতোষ সরকার স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ বিডিবিএল শাখার উপদেষ্টা (জুলাই গনহত্যা মামলার আসামী)।
চলমান পদোন্নতিতে দুই ডিএমডি এবং ব্যাংকের একজন অবসর প্রাপ্ত জিএম (বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা) পতিত চন্দ্র বারিকের নেতৃত্বে ৪/৫ লাখ টাকার বিনিময়ে পদোন্নতি বাণিজ্য চলছে। ভাইভা বোর্ডের সদস্য শচীন্দ্র নাথ সমাদ্দার মাধ্যমে সিনিয়র কর্মকর্তাদের ভাইভায় উল্টাপাল্ট প্রশ্ন করে ফেল করানো, নম্বর কম দিয়ে পদোন্নতি বঞ্চিত করে আওয়ামী নেতাদের পদোন্নতি ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
৫ই আগস্ট পরবর্তী সব সংগঠন ব্যাংকে স্থবির হলেও তাদের সহযোগিতায় করছে অফিসার্স এসোসিয়েশনের আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তারা। বর্তমান অফিসার্স এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটির উল্লেখযোগ্য পদে রয়েছেন। যেমনঃ এসোসিয়েশন সভাপতি, মোঃ ইকবাল হোসেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি, এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম রাকিব, স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ ও সমাজকল্যাণ পরিষদের কার্যকরী সদস্য, দুই সহ-সভাপতি মোঃ সালেহ উদ্দিন মাহমুদ সৈকত, মোঃ নুর উদ্দিন চৌধুরী যথাক্রমে সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, দুই যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির ও মোঃ মাহবুবুল করিম ভূঁইয়া (টিটু) যথাক্রমে স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সভাপতি ও সহ-সভাপতি হিসাবে আছেন। এছাড়া, এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মনোয়ার হোসেন, স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, এসোসিয়েশন দপ্তর সম্পাদক দিপংকর বিশ্বাস ও ক্রীড়া সম্পাদক জান্নাতুল বাকী দুজনেই স্বাধীনতা ব্যাংকার্স! পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক। উল্লেখযোগ্য কয়েকজন কার্যনির্বাহী সদস্যদের মধ্যে মোঃ সাহাবুদ্দিন স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের কেন্দ্রিয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (তার ভাই বেনাপোল পৌরসভায় নৌকার মেয়র), মোঃ আল-আমিন স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সহ-সভাপতি (তার ছোট ভাই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা), মোঃ আকতার হোসেন স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সহ-সভাপতি।
৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাথে সাথে দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত হলেও সরকারি মালিকাধীন এই ব্যাংকে আওয়ামীপন্ত্রী দোসরদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে অফিসার এসোসিয়েশন নামে, যার গডফাদার হলেন ডিএমডি পরিতোষ সরকার। এমনকি ৫ আগস্টের পর ব্যাংকে আওয়ামীপন্ত্রী কর্মকর্তাদের পুর্নবাসন করা হচ্ছে। নিয়মিত এমডি না থাকার সুযোগে বিডিবিএল-এর আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের নিজ নিজ সুবিধামতো স্থানে পদায়ন করেছেন এবং তাদের অপরাধের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার নীল নকশা বাস্তবায়ন করছেন। তার প্রদত্ত লিস্ট ছাড়া কোন কর্মকর্তার বদলি পর্যন্ত হয় না।
ডিএমডি পরিতোষ সরকার, ব্যাংক ও ব্যাংকের বাহিরে আওয়ামীলীগপন্ত্রী বিভিন্ন সংগঠনের অর্থ সরবরাহকারী। বর্তমান এসোসিয়েশনের নাম ব্যবহার করে বদলী বাণিজ্য, পদোন্নতি বাণিজ্য, ব্যাংকের গ্রাহকদের কাছে চাঁদাবাজীসহ ফ্যাসিস্টদের পুন:প্রতিষ্টায় লিপ্ত। এ থেকে ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তারা মুক্তি চায় ও বৈষম্য মুক্ত বিডিবিএল গঠনের দাবী জানান।