ঢ্যাঁড়শের কেজি ১২০, হঠাৎ বেপরোয়া পেঁয়াজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৮ এএম, ২০ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:২৩ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
তিন দিন আগে এক কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকায়। আজ সেই একই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। একই অবস্থা সবজি ও মাছের বাজারেও। নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন গড়পড়তা আয়ের মানুষজন।
আজ শনিবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে সবচেয়ে দামি সবজি ঢ্যাঁড়স। যা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, এটা ঢ্যাঁড়শের মৌসুম নয়। তাই দাম স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। বর্ষাকালে দাম কমে যাবে। বাজারে গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে করলা। কালো বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজিতে। এর আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। প্রকার ভেদে শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। পাকা টমেটো ৩৫ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজিতে। অথচ গত সপ্তাহে শিম বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে। চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। শীতকালীন সবজি ফুলকপির মধ্যে ছোট ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পিস। বড় কপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। একই দরে বিক্রি হচ্ছে বাধা কপিও। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা কেজিতে। যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা কেজিতে। বাড্ডা কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী রিমন বলেন, এখন ঢ্যাঁড়শের মৌসুম নয়। তাই দাম বেশি। দাম বেশি হওয়ার কারণে বিক্রি কম হচ্ছে।
বিভিন্ন ধরনের শাকের মধ্যে লাল-পালং শাক বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকা আঁটিতে। আর মটর শাক ও বাথুয়া শাক বিক্রি ৬০-৪০ টাকা কেজিতে। লাউ শাক বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা আঁটি। তিন দিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গত বুধবার প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকায়। আজ সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। আর শুকনো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে। তবে রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। ইন্ডিয়ান রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ী আনিছুজ্জামান বলেন, দুই তিন আগেও পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে। সেই পেঁয়াজ এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। কারওয়ান বাজার থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৮ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। আমরা কেজি প্রতি ৩-৫ টাকা লাভে বিক্রি করছি ৫৫ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মফিজ আনোয়ার বলেন, গত কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। তাই পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। তবে তুলনামূলক কম দামে আলু, গাজর এবং পেঁপে কিনতে পারছেন ক্রেতারা। বাজারগুলোতে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকা কেজিতে। গাজর বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা আর পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজিতে।
মাছ-মাংসের বাজারও চড়া : গরুর মাংস কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭৫ টাকা কেজিতে। অথচ সপ্তাহ খানেক আগে বিক্রি হয়েছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা হালিতে। আর দেশি ৬০ টাকা। ২৪০ থেকে ৪২০ টাকার রুই মাছ আজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। ছোট শিং ৩৪০ টাকা কেজিতে। আর বড় শিং বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা। টেংরা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে। বাজার করতে আসা বাড্ডার বাসিন্দা মনিহা হাওলাদার বলেন, তেল, চাল, ডালের দাম বাড়তি এখন বাজারে এসে দেখি পেঁয়াজের দামও দ্বিগুণ। আলু ছাড়া মাছ, মাংস ও সব ধরনের সবজির দামও দ্বিগুণ হয়েছে।