সামনের বছর শতকরা ১৭ ভাগের বেশি মানুষ কঠিন সংকটে পড়বে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:৩৮ পিএম, ৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৪৬ এএম, ২ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
চলতি বছরের চেয়ে ১৭% বেশি অর্থাৎ ২৭৪ মিলিয়ন (২৭ কোটি ৪০ লাখ) মানুষ কঠিন সংকটে পড়বে সামনের বছর। এদের খাদ্য-সংকটসহ দৈনন্দিন ন্যূনতম চাহিদা পূরণে এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে ১৮ কোটি ৩০ লাখ (১৮৩ মিলিয়ন) মানুষের অবস্থা হবে খুবই সঙ্গীন। এদের বাঁচানোর জন্যেই প্রয়োজন ৪১ বিলিয়ন ডলার।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার সম্পর্কিত মূখ্য কর্মকর্তা মারটিন গ্রিফিট্স বিশ্বের গরিবের চেয়েও গরিব মানুষদের হাল-হকিকত এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয় সম্পর্কে বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন উদ্বেগজনক তথ্য উপস্থাপন করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা, পরিবেশ দুষণ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিদিনই বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে। ভিটে-মাটি হারিয়ে ভাসমান জনতার তালিকাও বাড়ছে ক্রমান্বয়ে। ৬৩ দেশেই এমন কঠিন সংকটে পড়া মানুষের সংখ্যা বেশি বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। বার্মা, আফগানিস্তান, ইথিয়োপিয়ার মত পরিস্থিতি মানবতাকে নাজুক অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন গ্রিফিটস। এর সাথে যুক্ত হয়েছে করোনা মহামারি। সহসা তা দূর হবে বলেও মনে করছেন না চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা। কারণ, গরিব দেশের সিংহভাগ মানুষই টিকা নিতে সক্ষম হচ্ছে না।
মারটিন গ্রিফিট্স উল্লেখ করেছেন, মানবতা বিপন্ন হয়ে পড়ার আগেই ধনী দেশ ও বিত্তশালীরা এগিয়ে আসবেন বলে আন্তরিক অর্থেই বিশ্বাস করছি। সে তাগিদেই দানশীল ব্যক্তি এবং সেবামূলক কাজে আগ্রহী সংস্থাগুলোর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি যথাসাধ্য সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে।
সারাবিশ্বে পরিচালিত গবেষণা-জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে এই রিপোর্ট উপস্থাপনের সময় ভয়ংকর চিত্র সম্পর্কে আলোকপাতকালে গ্রিফিট্স বলেন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১% বাস্তুচ্যুত হয়েছে এ বছর। চরমদারিদ্রতাও বাড়ছে। অনাহার-অর্দ্ধাহারে দিনাতিপাতকারির অধিকাংশই নারী এবং শিশু। নারী-পুরুষের বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করেছে তথ্য-প্রযুক্তির বিস্তার সত্বেও। ৪৩ দেশের ৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষে পড়বে সামনের বছর। এমন খাদ্য-সংকট থেকে বিরাট জনগোষ্ঠিকে রক্ষার জন্যে খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশগুলোর এগিয়ে আসা জরুরী। করোনা মহামারি, অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়া দেশসমূহের ১২০টি সিভিল-সোসাইটির মধ্যে ১০০টি এক যুক্ত বিবৃতিতে বিশ্বনেতাদের অর্থ-সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের সংকটে বহু রাষ্ট্র, সংস্থা এবং ব্যক্তির ঊমিকা ছিল প্রশংসনীয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অনেকেই খাদ্য, ওষুধ, চিকিৎসা-সামগ্রি এবং অতি প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছেন। মহাবিপদে পড়া জনগোষ্ঠির ৭০% তথা ১০ কোটি ৭ লাখ মানুষই ন্যূনতম চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়েছে বলে গ্রিফিট্স তার রিপোর্টে মন্তব্য করেছেন। অকল্পনীয় দুর্ভিক্ষের কবল থেকে সাউথ সুদানের ৫ লাখের অধিক মানুষ রক্ষা পেয়েছে বিত্তবানরা পাশে দাঁড়ানোয়। ইয়েমেনের এক কোটি মানুষ চিকিৎসা-সেবা পেয়েছে। আফগানিস্তানে তালেবানরা ক্ষমতা দখল সত্বেও জাতিসংঘের স্বেচ্ছাসেবকরা জীবনের ঝুঁকিয়ে নিয়েই আর্তমানবতার সেবায় কাজ অব্যাহত রেখেছন।