শায়েস্তাগঞ্জে দুধ নিয়ে বিপাকে খামারিরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৪৬ পিএম, ৮ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০৩ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় সরকারি স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। সরকার আরোপিত স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের লক্ষ্যে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ কারনে সকল মিষ্টি বিক্রির দোকানসহ হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন দুগ্ধ খামারিরা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দুধের চাহিদা একেবারেই নাই একইসাথে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন লোকসান গুনতে হচ্ছে উপজেলার দুগ্ধ খামারীদের।
হিসাব বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেও কোন চাকরি না করে নিজ উদ্যোগে শায়েস্তাগঞ্জ এগ্রোফার্ম ও এগ্রিটেক্ট ফার্ম লিমিটেড নামে দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার দাউদনগর মহল্লার সৌরভ পাল চৌধুরী। তার এই ডেয়ারী ফার্মে দৈনিক প্রায় ২শ লিটার দুধ উৎপন্ন হয়। এসব দুধ মিষ্টান্ন তৈরীর দোকানসহ হোটেল-রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে তিনি স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দোকানপাট বন্ধ থাকায় উৎপাদিত দুধ নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন তিনি।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় সৌরভ পাল চৌধুরীর মতো আরও ৩২টি দুগ্ধ খামারের মালিকরা একই ধরণের বিপাকে পড়েছেন।
এসব খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ রয়েছে মিষ্টির দোকান, এই দোকানগুলোতে কাঁচামাল হিসেবে গরুর দুধের চাহিদা ছিল প্রচুর। বিশেষ করে মিষ্টান্ন উৎপাদনে দুধের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
শায়েস্তাগঞ্জ এগ্রোফার্মের স্বত্বাধিকারী সৌরভ পাল চৌধুরী বলেন, তার ফার্ম থেকে দৈনিক প্রায় ২ শ লিটার দুধ উৎপাদন হয় যা দিয়ে ৫ জন শ্রমিকসহ নিজের পরিবারের খরচ বহন করেন। বর্তমানে চাহিদা না থাকায় উৎপাদিত দুধ গাভীর বাছুরকে খাওয়াতে হচ্ছে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে গড়া খামারে প্রচুর লোকসান গুনতে হচ্ছে যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া বাজারে পশু খাদ্যের দামও বেশি। এভাবে চলতে থাকলে পথে বসতে হবে।
মায়া ডেইরি ফার্মের মালিক মিজানুর রহমান রাসেল বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার খামারগুলোতে দৈনিক প্রায় ২ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন করা হয়। প্রায় প্রত্যেকটি খামারের মালিকরা দুধের মূল্য হ্রাস করেও বিক্রি করতে পারছেন না। আরেকজন মহিলা খামারি সালমা বেগম বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে দুগ্ধজাত দ্রব্য বিক্রির সকল দোকান বন্ধ রয়েছে। ফলে তার খামারে উৎপাদিত দুধ বিক্রি করতে পারছেন না। এ ধারা অব্যাহত থাকলে খামার ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যাবে।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রমা পদ দে এ বিষয়ে বলেন, শায়েস্তাগঞ্জে বড়-ছোট মিলে ৩২টি দুগ্ধ খামার রয়েছে। করোনা পরিস্থিতে দোকানপাট বন্ধ থাকায় উৎপাদিত দুধ বাজারজাত করতে পারছেন না খামারিরা। সরকারিভাবে দুগ্ধ খামারিদের তালিকা করা হচ্ছে। দুগ্ধ খামারির বিষয়টি সরকারের নজরে আছে।