টিকার মজুদ নেই, দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যাচ্ছে না
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩১ এএম, ১৪ এপ্রিল,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৪ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ প্রাপ্ত সবার জন্য এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ডোজের টিকার মজুদ নেই। আজ সারা দেশে ৫৬ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৩ জনকে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে গত ৫ দিনে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে ৫ লাখ ২২ হাজার ৫৯৬ জনকে। সব মিলিয়ে দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন ৬১ লাখ ৭২ হাজার ১৫৯ জন।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা এবং ভারত সরকারের উপহার হিসেবে মোট ১ কোটি ৩ লাখ লাখ ডোজ (চুক্তি অনুযায়ী কেনা ৭০ লাখ, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৩২ লাখ এবং ভারতের সেনাবাহিনী প্রধানের উপহার এক লাখ ডোজ) টিকা।
গতকাল পর্যন্ত সরকারের কাছে ৪১ লাখ ২৭ হাজার ৮৪১ ডোজ টিকা ছিল। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত টিকার জন্য মোট নিবন্ধন করেছেন ৭০ লাখ ৫৮ হাজার ৯৯৯ জন। ফলে টিকার আরো একটি চালান না আসা পর্যন্ত নিবন্ধিত সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া যাবে না।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, আমরা আশা করছি শিগগিরই আরেকটি টিকার চালান আসবে। সে জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত দেশে এপ্রিলের ১২ দিনে করোনা সংক্রমণের রেকর্ড সর্বোচ্চ হয়েছে। করোনাকালের এই ১২ দিনে দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে, সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছে এবং সর্বোচ্চসংখ্যক পরীক্ষা করা হয়েছে। আইইডিসিআর’র তথ্যানুযায়ী, এপ্রিলের ১২ দিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭৭৬ জন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে গতকাল ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে ৯ হাজার ৮২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে ১২ মে পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যু ছিল ২৫০ জন। অপরদিকে ১২ জুন পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যু ছিল এক হাজার ৯৫ জন। এরপর থেকে মৃত্যু কিছুটা বেড়ে যায়।
জুলাই মাসে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ১০২ জন, আগস্ট মাসে মারা যায় এক হাজার ৩১৬ জন, সেপ্টেম্বরে মৃত্যু হয় এক হাজার ১৮৯ জন, অক্টোবরে মৃত্যু হয় ৮৫৩ জন, নভেম্বরে মৃত্যু হয় ৫৮৫ জন, ডিসেম্বরে মৃত্যু হয় ৮৮০ জন। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশে করোনায় মৃত্যু হয় ৭৯৯ জন। ফেব্রুয়ারি মাসে আগের মাসগুলোর তুলনায় মৃত্যু হার অনেক কম ছিল। এ কারণে অনেকেই মনে করেছিলেন যে বাংলাদেশ করোনা মুক্ত হতে চলেছে।
ফেব্রুয়ারিতে মোট মৃত্যু হয় ৪৩৪ জন। এরপর মার্চ মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর কারণ হিসেবে এখন বলা যাচ্ছে বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকান ও ইউকে ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। এই দুইটি ভ্যারিয়েন্ট খুবই সংক্রামক। ফলে মার্চ মাসে নতুন সংক্রমণ বাড়ে প্রচুর কিন্তু সে তুলনায় মৃত্যু খুব বেশি ছিল না। গত মার্চ মাসে করোনায় মৃত্যু হয় ২৬২ জন। সে তুলনায় চলতি এপ্রিলের প্রথম দিনে মৃত্যু হয়েছে ৭৭৬ জনের। চিকিৎসকেরা মৃত্যুর এ সংখ্যায় বেশ আতঙ্কিত। সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি পরিমাণ মৃত্যু বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এপ্রিলের ১২ নুমনা পরীক্ষাও বেড়েছে অনেক বেশি। গতকাল সর্বোচ্চ ৩৪ হাজার ৯৬৮টি পরীক্ষা করা হয়েছে। অপরদিকে এ মাসেই আরো কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা অন্যতম। দেশে সরকারি মালিকানাধীন ১০০টি অ্যান্টিজেন পরীক্ষাগার রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১২১টি আরটি পিসিআর পরীক্ষাগার রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ৫২টি। অপর দিকে যক্ষ্মার জীবাণু পরীক্ষার মেশিন জিন এক্সপার্ট মেশিনগুলোকে এখন করোনা পরীক্ষার কাজে লাগানো হচ্ছে। এ ধরনের মেশিন রয়েছে ৩৪টি। এর মধ্যে সরকারি মেশিন ৩২টি। সব মিলিয়ে দেশে করোনা পরীক্ষাগার রয়েছে ২৫৫টি।