বাজিতপুর উপজেলা প:প: কর্মকর্তার কার্যালয় দুর্নীতির বেড়াজালে বন্ধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৭ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৫১ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
করোনা সংকটেও থেমে নেই কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অনিয়ম দুর্নীতি। সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সূত্র ও তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বাজিতপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে মাসের পর মাস জন্ম নিয়ন্ত্রনের ভুয়া পদ্ধতি গ্রহণকারী দেখিয়ে মোটা অঙ্কের সরকারী টাকা লুটপাট হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে উপজেলায় স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহীতার তথ্যে ব্যাপক গরমিল রয়েছে। উপজেলা মেডিকেল অফিসার ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ফারজানা হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাজিতপুর থেকে বদলী হয়ে যাওয়া অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীর স্বাক্ষর জাল করে তাদের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। নিজ কর্মস্থলের অন্য কর্মকর্তাদের সন্মানী ভাতাও তিনি জাল স্বাক্ষরে উত্তোলন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহীতাদের ভূয়া তথ্য দিয়ে জেলা অফিসে প্রতিবেদন পাঠানোকে তিনি নিয়মিত আইনে পরিনত করেছেন। তথ্যমতে, স্বাভাবিক স্থায়ী পদ্বতির একজন গ্রহিতার ক্ষেত্রে সরকারের ব্যয় হয় প্রায় ৪ হাজার টাকা। অথচ বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিক কিংবা হাসপাতাল থেকে যে সব মহিলা সিজারিয়ান লাইগেসন করেন, তাদের নিকট থেকে ছাড়পত্র সংগ্রহ করে সেই সব ছাড়পত্র দিয়ে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেন। আর এ ভাবেই তিনি লাখ লাখ সরকারী টাকা লুটপাট করছেন বলে জানা গেছে। আই ইউ ডি পদ্ধতি গ্রহিতাদের প্রতিবেদনের ক্ষেত্রেও অনুরূপ অভিযোগ রয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা গেছে ডাক্তার ফারজানা হক ঢাকায় থাকেন, তাই তিনি নিয়মিত অফিস করেন না, মাসে একদিন কি দুই দিন তিনি অফিসে আসেন। এ নিয়ে বাজিতপুর উপজেলার স্থায়ীবাসিন্দা ও অফিসের কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। দেশে করোনা দুযোর্গ শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি অধ্যাবধি নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও ভূয়া বিল ভাউচারে সরকারী টাকা উত্তোলন থেমে নেই।
উপজেলার সেবা গ্রহিতাদের অভিযোগ সরকারের সেবা বিভাগ হিসেবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুক্রবার ব্যতিত নির্ধারীত একটি কক্ষ সার্বক্ষনিক খোলা থাকার বিধান থাকলেও ডাক্তার ফারজানা হক কোন দিন এ নিয়ম মানেননি। এখানেই শেষ নয় উপজেলার হুমাইপুর মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটিতে কোন কার্যক্রম নেই, বিগত কয়েক বছর যাবৎ কেন্দ্রটি বন্ধ। অথচ বন্ধ কেন্দ্রটির কার্যক্রম দেখিয়ে তিনি সরকারের হাজার হাজার টাকা আত্মসাৎ করছেন।
এ ছাড়া উপজেলা কার্যলয়সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র গুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বিভিন্ন মালামাল ক্রয় দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ডাক্তার ফারজানা হকের বিরুদ্ধে। গ্যাস ও জ্বালানী, বিছানাপত্র ক্রয়, এম এস আর যন্ত্রপাতি, ঔষধ প্রতিষেধক, চিকিৎসা সরঞ্জাম ইত্যাদি ক্রয় দেখিয়ে সরকারী টাকা আত্মসাৎ করছেন অভিযোগ উঠেছে।
উক্ত বিষয়ে ডা. ফারজানাকে কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বাজিতপুর পরিবার পরিকল্পনার অফিস সহকারী রফিকুল ইসলামের দাবি হুমায়পুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি খোলা রয়েছে। তবে ডা. ফারজানার বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। ব্যাপারে জেলা পরিবার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক এসএম খায়রুল আমিন এর কাছে জানতে চাইলে জানান, আমি বাজিতপুরের অভিযোগের বিষয়গুলো দেখবো আমার জানামতে ডা. ফারজানা ডেঙ্গু জরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধান রয়েছে। আমি বাজিতপুরে নতুর অফিসার নিয়োগ দেওয়ার জন্য সুপারিশ পাঠিয়েছি।
এ ব্যাপারে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মতিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন উক্ত বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সুপারিশ করবো।