টিউশনির অর্থ জমিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ফেদু-স্যার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৮ পিএম, ২৭ মে,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:২২ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
‘ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়’ এই উপমা’টির বাস্তবায়ন করে লেখাপড়ার পাশাপাশি টিউশনির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অর্থ জমিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন একতলা বাড়ি নির্মাণ করে এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পবনবেগ মালোপাড়ার বাসিন্দা কামার গ্রাম কাঞ্চন একাডেমীর সদ্য অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, কামার গ্রাম শাহানারা একাডেমীর অধ্যক্ষ বাবু অমর কুমার দাসের কনিষ্ঠ পুত্র ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এর অনার্স-মাষ্টার্স সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ শেষ বর্ষের ছাত্র অনল কুমার দাস (ফেদু) (২৩)।
ফেদুর বাবা বাবু অমর কুমার দাস (৬৭) দিনকালকে জানান আমার ৫ছেলে মেয়েদের মধ্যে কনিষ্ঠ পুত্র ফেদু, সে যখন ৩য় শ্রেনীতে অধ্যায়নরত তখন থেকে শিশু শিক্ষার্থীদের পড়ানো শুরু করে। সেই থেকে টিউশনি ওর পেশা থেকে নেশায় পরিনত হয়েছে।
বর্তমানে চলমান করোনা কালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, ছেলে মেয়েরা বই থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন, এ দুর্যোগে স্বাস্থ্য বিধি মেনে প্রথম শ্রেনী থেকে ইন্টার মিডিয়েট পর্যন্ত ধাপে ধাপে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে ফেদু। তিনি আরো জানান, যে সময় তার লেখাপড়ার খরচ আমার বহন করার কথা সে সময় নিজেই পড়ার খরচ চালানোর পাশাপাশি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অর্থ জমিয়ে উক্ত একতলা বাড়িটি প্রায় ১৫লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করেছে। আমি তাকে একটি টাকাও দেইনি। উল্টা সে তার উপর্জনের টাকা আমাকে দিয়েছে।
ফেদুর প্রসংসায় পঞ্চমুখ গরীব উপকার ভোগী এক শিক্ষার্থীর অবিভাবক উপজেলার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ ওরফে (মুন্নু) মোল্যা (৭৫) জানান ফেদু আমার ২টি ছেলেমেকে পড়ায়, কখনও কিছু টাকা দেই, আবার কখনও দেইনা। তবে তিনি কখনও টাকা পয়সা চাননা। তার মাতা শোভারানী দাস (ডলি) (৬২) একজন সু-গৃহিনী ও হোমিও চিকিৎসক।
ফেদু ছাড়াও তার আরো ২টি ভাই ও ২টি বোন রয়েছে। বড় ভাই আশিস কুমার দাস (৩৫) একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একই বিষয়ে অনার্স-মাষ্টার্স পাশ করে একটি গার্মেন্টেসে কর্মরত রয়েছেন, মেঝ ভাই তাপস কুমার দাস (৩৩) একই বিশ্ববিদ্যালয় মানবিক বিভাগ থেকে অনার্স মাষ্টার্স পাশ করে তিনি ও একটি গার্মেন্টেসে কর্মরত রয়েছেন। বড় বোন লাবনী দাস (৩২) তিনিও উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মষ্টার্স পাশ করে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা করছেন, ২য় বোন বনানী দাস (৩০) গৃহিনী।
উল্লেখ্য ফেদুর বাবা এক সময় উপজেলার হেলেঞ্চা উচ্চবিদ্যালয়ের কেরানি ছিলেন পরে তিনি উচ্চশিক্ষা লাভ করে উপরে উল্লেখিত বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।