ইয়াসের প্রভাবে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪১ পিএম, ২৬ মে,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৩৮ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বুধবার ভোর রাত থেকে চট্টগ্রামে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি সমুদ্রের উপকূলে জোয়ারের উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাগরের বড় বড় ঢেউ সমুদ্র তীরে আঁছড়ে পড়ছে। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে পতেঙ্গা এলাকার উপকূলবর্তী অঞ্চলসহ নগরের নিম্নাঞ্চল। সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। অনেকের বাসা ও দোকানেও পানি প্রবেশ করেছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে দমকা হাওয়া বইলেও সকাল থেকে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে চট্টগ্রামে।
এদিকে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল জানিয়েছেন, ইয়াসের প্রভাবে সমুদ্রে জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩ থেকে ৬ ফুট বেশি হচ্ছে। তিনি বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ভারতের ওডিশা অতিক্রম করছে দুপুরে দিকে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের সমুদ্রের উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে পূর্ণিমারও প্রভাব রয়েছে। এসব কারণে জোয়ারের স্বাভাবিক উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। জোয়ারের পানিতে উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি দিনভর বৃষ্টি হতে পারে।
চট্টগ্রামের সমুদ্র উপকূলীয় সীতাকুন্ড ও বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বুধবার (২৬ মে) বেলা ১২টায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অন্যদিনের চাইতে ৩ ফুট উচ্চতায় জোয়ার বয়ে যায়। ফলে উপকূলীয় এলাকার সহস্রাধিক মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
সীতাকু- উপজেলার দক্ষিণ সোনাইছড়ি ও ঘোড়ামারা এলাকার ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে দক্ষিণ সোনাইছড়ি, ঘোড়ামারা ও উত্তর বগাচতর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
আর বাঁশখালী উপজেলার সরল বাজার, পোমরা, খানখানাবাদ এলাকার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় পোমরা, সরল, ছনুয়া, গামারা গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার খানেক পরিবার। বছরের পর বছর ভাঙা বেড়িবাঁধ মেরামত না করার কারণে উঁচু মাত্রায় জোয়ার হলেই উপকূল প্লাবিত হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। দ্রুত এসব ভাঙা বাঁধ মেরামতের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রবাদ সিডিএ আবাসিক ও হালিশহরের নীচু এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট। ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। অনেকের বাসা-বাড়িতেও জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। এতে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকায় বসবাসকারীরা।
চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডেও পানি
ইয়াসের প্রভাবে এবার চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডেও জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। যদিও নগরের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলোসহ নিম্নাঞ্চলে জোয়ারের পানি উঠেছে। তবে বন্দর ইয়ার্ডে জোয়ারে পানি উঠলেও অপারেশনাল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের।
আজ বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে বন্দরের ৫ নম্বর ইয়ার্ডের পাশ্ববর্তী মহেশখাল থেকে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় বন্দরের এনসিটি, সিটিটি রেফার ইউনিট, আইসিডি ইউনিট প্লাবিত হয়। জোয়ারের প্রায় ৭ থেকে ৮ ইঞ্চি উচ্চতায় পানি প্রবেশ করে বন্দর ইয়ার্ডে। তবে এতে কন্টেইনার ভর্তি পণ্য নষ্ট হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। ভাটায় পানি নেমে যাবে।