দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে বাংলাদেশের কোষাগার শূন্যের কোটায় নিয়ে গেছে সরকার : আমীর খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৭ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:০৪ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, তারা চরম দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে বাংলাদেশের কোষাগার শূন্যের কোটায় নিয়ে গেছে। তারপর ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিয়ে চালাচ্ছে। তার ওপরে আবার ৫০ হাজার কোটি টাকার নোট ছাপিয়েছে ইতোমধ্যে। তারা দেশ কীভাবে চালাচ্ছে, এটা মানুষের জানা দরকার।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে নিজ অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘একদিকে মেগা প্রজেক্টের নামে লুটপাট করে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, অন্যদিকে লুটপাট করে ব্যাংকগুলো খালি করে দিয়েছে। টাকার অভাবে এলসি খুলতে পারছে না, ডলারের অভাবে এলসি খুলতে পারছে না। পুরো বিষয়টি হচ্ছে, একটি অবৈধ দখলদার সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, যাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিটি জায়গায় লুটপাটের কারণে মূল্য বেড়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘অবৈধ দখলদার সরকার জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ক্ষমতা দখল করে অব্যাহতভাবে থাকতে চাচ্ছে। তারা চাচ্ছে, এখানে একটি সহিংসতা, তারা নিজেরা সহিংসতা করছে এবং সহিংসতা বাড়ানোর একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে চলছে। সাম্প্রতিক আগুন সন্ত্রাসের কথা বলেছে, তারা বিরোধী দলে থাকতে আগুন-সন্ত্রাস করেছে, সরকারি দলে থাকতে আগুন সন্ত্রাস করেছে, আবার এখন আগুন-সন্ত্রাসের কথা বলছে। সুতরাং এরা চাচ্ছে একটি সহিংসতা। অবৈধভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার যে একটি প্রক্রিয়া, ভোট চুরি করার প্রক্রিয়া রয়েছে এটাকে তারা অব্যাহত রাখতে চাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সহিংসতা চাচ্ছে না। তারা চাচ্ছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর। তারা জনগণের নির্বাচিত সরকার গঠন করতে চাচ্ছে। সুতরাং আন্দোলন সেদিকে চলছে, এটাই আন্দোলনের ধারা, আমাদের এর বাইরে যাওয়ার কোনো প্রশ্ন ওঠে না।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের শক্তির ওপর কোনো শক্তি থাকতে পারে না। জনগণের শক্তির বিরুদ্ধে কোনো অপশক্তি থাকতে পারে না। এটা বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশের মানুষ ভাষার জন্য প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে প্রমাণ করেছে এবং এবারও প্রমাণ করছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের মানুষের যে অবস্থান, সেটা তারা জানিয়ে দিয়েছে। কর্মসূচিতে তাদের উপস্থিতির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে এবং বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে তারা এই কাজটি করছে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘প্রথম ধাপের আন্দোলনের সকল বাধাবিপত্তি মামলা, হামলা, সরকারের গণপরিবহন বন্ধের পরও সফল হয়েছি। তারা (সরকার) রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে। যত বেশি রাজনৈতিকভাবে তারা পরাজিত হচ্ছে, তত বেশি তারা শক্তির কথা বলছে, তত বেশি তারা সহিংসতার কথা বলছে। তারা আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে, তারা আগুন-সন্ত্রাসের কথা বলছে। সুতরাং এতেই প্রমাণ করে, জনগণের সমর্থন এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কাছে কোনো কিছুই দাঁড়াতে পারে না।’
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ তাদের বিশ্বাস করছে না, বাংলাদেশের মানুষ তাদের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের বিদায় দেওয়ার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই অবৈধ দখলদার সরকারকে বিদায় করবে। জনগণকে তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে তারা একটি নির্বাচিত সংসদ গঠন করতে চায়। এই মডেলের বিপরীতে অন্য কোনো মডেলের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এবং বিদেশি গণতান্ত্রিক দেশের কাছে একটি মাত্র মডেল, সেটি হচ্ছে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকার গঠিত হবে। যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে এর বিপরীতে অন্য কোনো সুযোগ নেই।’
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি কে হলো, এ নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তার নিজের ভোট দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চায়। যে সরকারের জবাবদিহি থাকবে। এর বাইরে মানুষের কোনো আগ্রহ নেই।’