চট্টগ্রাম নগরীসহ পাঁচ উপজেলায় বন্ধ হয়ে গেল টিকাদান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৫২ পিএম, ২৫ মে,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৪২ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
টিকার সংকটে চট্টগ্রাম মহানগরের কেন্দ্রগুলোতে করোনার টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে রোববার থেকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোমবার থেকে এবং চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশন জেনারেল হাসপাতালে আজ মঙ্গলবার থেকে টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সিএমএইচ (সামরিক হাসপাতাল) ছাড়া মহানগরের অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতে এর আগেই টিকাদান বন্ধ হয়ে যায়। মহানগরের কেন্দ্রগুলোতে টিকাদান বন্ধের তথ্য নিশ্চিত করেছেন চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী। তবে এটিকে ‘সাময়িক বন্ধ’ দাবি করে ঢাকা থেকে টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে পুনরায় টিকাদান কার্যক্রম চালু করার কথা জানান তিনি। টিকা না পাওয়ায় টিকাদান বন্ধের তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা টিমের ফোকাল পারসন ডা. আব্দুর রব মাসুম। অবশ্য, টিকা পেলে পুনরায় টিকাদান কার্যক্রম চালু করা হবে বলে জানান তারা।
এদিকে, মহানগরের পাশাপাশি পাঁচ উপজেলায়ও টিকাদান বন্ধ হয়ে গেছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতে সবমিলিয়ে মজুদ টিকার সংখ্যাও বর্তমানে ৫ হাজারের কম। যা ২/১ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যেতে পারে। এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, এরইমধ্যে লোহাগাড়া, সন্দ্বীপ, বোয়ালখালী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় (৫ উপজেলায়) টিকাদান বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি উপজেলাগুলোতে খুব স্বল্প সংখ্যক (৫ হাজারের কম) টিকা মজুদ রয়েছে। মজুদ টিকায় বড় জোর কয়েকদিন টিকাদান চালানো যাবে। এরপরই পুরো জেলায় টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যদিও নতুন টিকা আসলে পুনরায় টিকাদান শুরু করা হবে বলেও জানান সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।প্রসঙ্গত, গত ৮ এপ্রিল থেকে করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান শুরু হয় চট্টগ্রামে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে- চট্টগ্রামে রোববার (২৩ মে) পর্যন্ত ৩ লাখ ৪১ হাজার ৪৫ জন টিকাগ্রহীতা তাদের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। এর আগে চট্টগ্রামের (মহানগরসহ জেলায়) মোট ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬০ জন মানুষ টিকার প্রথম ডোজ নেন। হিসেবে প্রথম ডোজ নেয়া আরো ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি টিকা গ্রহীতা দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন।
অন্যদিকে, জেলায় বর্তমানে মজুদ টিকার সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি নয়। যদিও মজুদের সব টিকাই উপজেলা পর্যায়ে। আর স্বল্প সংখ্যক ডোজ রয়েছে মহানগরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়- চট্টগ্রামে প্রথম ডোজ গ্রহীতাদের মাঝে আরো লক্ষাধিক টিকাগ্রহীতা নির্ধারিত সময়ে তাদের দ্বিতীয় ডোজ পাচ্ছেন না। আদৌ পাবেন কী না, তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। তবে আগামী মাসের মধ্যেই টিকা পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন- আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। যা জুন মাসের মধ্যেই পাওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম ডোজ গ্রহনের ৩ বা ৪ মাসেও দ্বিতীয় ডোজ নেয়া যাবে মন্তব্য করে হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধারণের আহবান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।