সাগরে সুপার সাইক্লোন সৃষ্টি : ২৬ মে আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১০ এএম, ২১ মে,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৪৯ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
অব্যাহত তাপপ্রবাহের কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগরের পৃষ্ঠদেশ। ঘূর্ণাবর্তের সঙ্গে সঞ্চারিত হচ্ছে ঘন মেঘমালা। সুপার সাইক্লোন আম্ফানের ঠিক এক বছরের মাথায় আগামী রবিবার পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে আরো একটি সুপার সাইক্লোন সৃষ্টির আভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এই সুপার সাইক্লোন ভয়ংকর শক্তি ধারণ করে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে আগামী বুধবারের মধ্যে আঘাত হানতে পারে সুন্দরবনসহ সন্নিহিত উপকূলভাগে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘যশ’। নামটি ওমানের দেয়া। প্রসঙ্গত, গত বছর ২১ মে তান্ডব চালিয়েছিল আম্ফান। স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ করে উইন্ডি ডটকম ও আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামী ২২ মে শনিবার ঘূর্ণাবর্তটি তৈরি হতে পারে মধ্য বঙ্গোপসাগরে। আন্দামানের কাছে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে রবিবার এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ক্রমশ এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ২৩ মের পরে নিম্নচাপ অক্ষরেখার গতিবিধি বুঝে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রাবল্য বা দিক সম্পর্কে আরো বিশদ জানা যাবে। প্রথমে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অভিমুখ থাকলেও পরে এর অভিমুখ পরিবর্তন হতে পারে। আজ পর্যন্ত এর যে অভিমুখ, তাতে পশ্চিমবঙ্গ-উড়িশ্যা-সুন্দরবন উপকূল এলাকাতেই আছড়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান জানান, আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের আলিপুর আবহাওয়া অফিস ধারণা করছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ থাকতে পারে সুন্দরবনের দিকে। তারপর অভিমুখ পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে যেতে পারে।
এদিকে বাতাস ও ঘূর্ণিঝড়ের তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট উইন্ডি ডটকমের তথ্য বলছে, ২৩ মে দুপুরে বঙ্গোপসাগরে দৃশ্যমান হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। যা ধীরে ধীরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এগিয়ে আসবে। ২৬ মে দুপুরে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের বালাসোর ও হলদিবাড়িতে আঘাত হানতে পারে। আর বিকাল থেকে রাতের মধ্যে বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া, কুয়াকাটা, সুন্দরবন অংশে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির সম্ভাব্য গতিপথ ধরা হয়েছে, বালাসোর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে।
ভারতের আলিপুর আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এক সঙ্গে দুটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হচ্ছে, একটি বঙ্গোপসাগরে, আরেকটি আরব সাগরে। দেশটির আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা, ঘূর্ণিঝড়টি গত বছরের আম্ফানের মতো সুপার সাইক্লোনে পরিণত হতে পারে। আছড়ে পড়তে পারে ভয়ংকর রূপ নিয়ে। আপাতত ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধির দিকে খেয়াল রাখছেন আবহাওয়াবিদরা।
আরও ২ দিন গরমের তীব্রতা থাকবে : জ্যৈষ্ঠের শুরুতে গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। গরমের তীব্রতা আরও দুইদিন থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলেছেন, আগামী ২২ মের দিকে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, এর প্রভাবে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পুরোপুরি স্বস্তি ফিরতে অপেক্ষা করতে হবে ২৫ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রীষ্মের দ্বিতীয় মাস জ্যৈষ্ঠের ৬ তারিখ। সকাল থেকেই ঢাকার আকাশে মেঘ-রোদের লুকোচুরি খেলা। ভ্যাপসা গরমে কষ্ট পাচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধদের কষ্টটা বেশি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, মূলত ২২ মের পর থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। কারণ তখন বৃষ্টি বাড়বে। এরমধ্যে এখন তাপমাত্রা যে রকম আছে অনেকটা সেই রকমই থাকবে, অল্প-স্বল্প বৃষ্টিও হবে। তবে আগামী ২৫ থেকে ২৬ তারিখের (মে) দিকে বৃষ্টিটা আরও জোরালো হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে একটি সিস্টেম ডেভেলপ (লঘুচাপ) করার কথা রয়েছে। যদিও সেটি ভারতে যায়, এর থেকে যে মেঘ হবে সেটা থেকে বাংলাদেশে কিছু বৃষ্টি হবে। লঘুচাপ সৃষ্টি হলে সেটি পর্যবেক্ষণ করে বলা যাবে তা আরও শক্তিশালী হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ কিংবা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি-না। আগামী ২২ মের দিকে লঘুচাপটি সৃষ্টি হওয়ার কথা। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ক্রমেই কমছে জানিয়ে এই আবহাওয়াবিদ আরও বলেন, গতকালের তুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বৃহস্পতিবার আরও কিছুটা কমতে পারে। মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৯ ডিগ্রি। একদিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে তা, বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনায় ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।