সাংবাদিক রোজিনা ন্যায়বিচার পাবেন - কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৫ এএম, ২০ মে,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:১৪ এএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হয়রানি ইস্যুতে সাংবাদিক সমাজের প্রতি ধৈর্য ধারণ এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যেহেতু মামলা হয়েছে এবং বিষয়টি বিচারাধীন, তাই সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক ন্যায়বিচার পাবেন। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের প্রতি কোনো অবিচার হলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শেখ হাসিনার ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৪ দশকে মানবতার আলোকবর্তিকা দেশরতœ শেখ হাসিনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং চারটি হাসপাতালে চারটি হাই-ফ্লো নজেল ক্যানুলা ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে কাজ করা চারটি সংগঠনে শিক্ষা সহায়তা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সেখানে যুক্ত হন। ঘটনার দিন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কেউ বিষয়টি সাংবাদিকদের ব্রিফ করলে এমন ‘ভুল বোঝাবুঝির’ সৃষ্টি না-ও হতে পারত বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
কাদের বলেন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯২৩ অনুযায়ী এ ধরনের গোপনীয় বিষয় প্রকাশযোগ্য নয়। সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের জন্য তথ্য অধিকার আইন রয়েছে। একথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, এভাবে লুকিয়ে তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন ছিল না। ঘটনা তদন্তের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, একথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের ওপর কোনো অন্যায় আচরণ করা হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার কথা বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনার সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে এবং দেশের গণমাধ্যমের প্রতি কোনো চাপ নেই। দেশের সংবাদমাধ্যম প্রতিনিয়ত দুর্নীতি এবং অপরাধের নানা খবর প্রকাশ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। যারা বলছেন দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করার জন্য সরকার দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, এ বক্তব্য আদৌ সত্য নয়, বলেন কাদের।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে সরকারি আবাসিক অফিসে সাংবাদিকদের সাথে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবেন। আমি শুধু এইটুকু বলব, এ রকম একটি ঘটনায় সরকার ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হোক এ রকম কোনো সন্দেহ যদি থাকে, তাহলে সরকার সেটি দূর করার চেষ্টা করবে। পরশুদিন বোধ হয় জামিনের শুনানি আছে, সেটি আদালত নিন্ডয়ই দেখবেন, সবকিছু বিবেচনা করবেন। আমিও প্রসিকিউশনকে মামলাটা খতিয়ে দেখার জন্য বলবো। তবে এটুকু বলতে পারি অবশ্যই তিনি (রোজিনা ইসলাম) ন্যায়বিচার পাবেন।
সোমবার (১৭ মে) বিকেল ৩টার দিকে রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার একান্ত সচিবের কক্ষে ফাইল থেকে ‘নথি সরানোর অভিযোগে’ তাকে সেখানে আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। নিজের ওপর নির্যাতনেরও অভিযোগ তোলেন রোজিনা। এক পর্যায়ে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর সাড়ে ৮টার দিকে তাকে শাহবাগ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় চুরি ও অফিশিয়াল সিক্রেটস আইনে মামলা করা হয়। মঙ্গলবার (১৮ মে) সকালে রোজিনাকে আদালতে তুলে পাঁচদিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। অন্যদিকে জামিন চান তার আইনজীবী। আদালত জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।