দেশে করোনার ভারতীয়সহ ৪ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত : আইইডিসিআর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০১ এএম, ১৮ মে,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৩১ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
সম্প্রতি আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবি ও আইদেশির সঙ্গে যৌথভাবে প্রায় ২০০ কোভিড-১৯ নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে দেশে চারটি ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির কথা নিশ্চিত করেছে।
আজ সোমবার আইইডিসিআর এক প্রতিবেদনে এ কথা জানায়। ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে- বি.১.১.৭ (ইউকে ভ্যারিয়েন্ট), বি.১.৩৫১ (সাউথ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট), বি.১.৫২৫ (নাইজেরিয়া ভ্যারিয়েন্ট) এবং বি.১.৬১৭.২ (ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্ট)।
আইইডিসিআর জানায়, বাংলাদেশে কোভিড-১৯-এর ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি শনাক্তে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) কাজ করছে। এছাড়া কোভিড-১৯ অতিমারির প্রারম্ভিক পর্যায় থেকে অ্যাক্টিভ কেস সার্চ, কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তকরণ, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং ও জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি পাশের দেশ ভারতে বিশ্বের সর্বোচ্চ কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আইইডিসিআর ভারত থেকে আগত ব্যক্তিদের মধ্যে রোগতাত্ত্বিক তদন্ত ও সন্দেহজনক রোগীদের জিনোম সিকোয়েন্সিং করছে। এ ধারাবাহিকতায় আইইডিসিআর বিগত এপ্রিল মাসে ভারত থেকে আগত ২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ছয় জন রোগীর নমুনায় বি.১.৬১৭.২ (ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্ট) শনাক্ত করে। এই ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভ্যারিয়েন্ট অফ কনসার্ন (ঠঙঈ) হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এ ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪৪টি দেশে শনাক্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আক্রান্ত রোগীদের সবাই বিগত ১ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে পাশের দেশ ভারতে (চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হরিয়ানা এবং পশ্চিমবঙ্গ) চিকিৎসার জন্য ভ্রমণ করেছেন। এই ছয় জনের মধ্যে তিন জন একই পরিবারের সদস্য। ছয় জনের বয়স ৭ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে। এরা সবাই এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশনে ছিলেন। এদের মধ্যে একজন বয়স্ক ব্যক্তি ক্যান্সারসহ অন্যান্য জটিল রোগে ভুগছিলেন এবং তিনি পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়া এই ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্ট-এর সিকোয়েন্স বৈশ্বিক ডাটাবেজ জিআইএসএআইডি (এওঝঅওউ)-তে জমা দেয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন পাওয়া গেছে ৬ জনের শরীরে : ভারত থেকে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের নমুনা পরীক্ষা করে এ পর্যন্ত ছয়জনের দেহে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ভারতীয় ধরনটি পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।
রবিবার আইইডিসিআর জানিয়েছে, গত এপ্রিলে ভারত থেকে আসা ২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ছয়জনের শরীরে ভাইরাসের ওই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়। করোনাভাইরাসের এ ধরনটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয়া হয়েছে বি.১.৬১৭। মিউটেশনের কারণে এর তিনটি সাব টাইপ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে পাওয়া গেছে বি.১.৬১৭.২ ধরনটি। ভারতে প্রথম এ মিউট্যান্ট শনাক্ত হয়েছিল বলে একে ভারতীয় ধরন বলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অন্তত ৪৪টি দেশে করোনাভাইরাসের এ ধরনটি ছড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ধরনটিকে চিহ্নিত করেছে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ (ভিওসি) হিসেবে।
দুঃসংবাদ, দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে প্রথম মৃত্যু : করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথম মৃত্যর ঘটনা ঘটেছে। ভারতে চিকিৎসা শেষে দেশ ফিরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় মারা যাওয়া দুই ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর একজন করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ছিলেন।
আজ সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে সংক্রমণের তুঙ্গে থাকা করোনাভাইরাসের ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’ গত ৮ মে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে শনাক্ত হয়। ভারত ফেরত ছয়জনের শরীরে এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল আইইডিসিআর। বেশ কিছুদিন ধরে সরকার ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে সতর্ক করে আসছিল। বলা হচ্ছিল, এই ভ্যারিয়েন্ট দেশে ঢুকলে বিপদ অনেক বেশি হবে। এরই মধ্যে দেশে ঢুকে পড়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট। প্রথমবারের মতো মৃত্যুও ঘটল এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীর। এতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে গেল।