হত্যার আলামত নষ্টকারীদের গ্রেপ্তার চান রায়হানের মা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৩৪ এএম, ১৫ নভেম্বর,রবিবার,২০২০ | আপডেট: ০৩:৪৬ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে রায়হান আহমদের নিহতের ঘটনায় আলামত নষ্টকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তার মা সালমা বেগম।
একই সঙ্গে প্রধান অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে পালিয়ে যেতে পরামর্শ ও সহযোগিতাকারীদের গ্রেপ্তার চান তিনি।
আজ (১৪ নভেম্বর) শনিবার দুপুরে নগরীর আখালিয়া নেহারিপাড়ায় রায়হানদের বাড়ির প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান তার মা।
তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ ছেলেকে কারা ধরে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে এবং তাকে কী জন্য নির্যাতন করেছে, সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার হয়নি। এই মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরাও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছে না। এটা আমার কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।’
সালমা বেগম আরও বলেন, সে সময় তিনি জানান যে, রায়হানের মোবাইল ফোনটি এখন পর্যন্ত পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়নি পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বৃহত্তর আখালিয়া সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মখলিছুর রহমান কামরান।
তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে রায়হান হত্যার অভিযোগপত্র দাখিল এবং সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর রাতে নগরীর আখালিয়া নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদকে (৩৪) বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নেয় পুলিশ। এরপর টাকার জন্য তার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়। তার হাতের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং হাত-পায়ে আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে। পরদিন সকালে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়হান মারা যান।
রায়হান সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারে একজন চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারীর চাকরি করতেন। তিনি বিবাহিত ও মাত্র ৩ মাস বয়সী তার একটি মেয়ে রয়েছে।
রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।
ঘটনার পরপরই এসএমপির গঠিত তদন্ত কমিটি যুবক রায়হানকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে নির্যাতনের প্রমাণ পায়। এএসআই আশেক এলাহী তাকে ধরে ফাঁড়িতে নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরের নেতৃত্বে নির্যাতন চালানো হয়।
এ ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়।