ফলাফল বাতিল ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ এএম, ১৪ নভেম্বর,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ০৩:৪৫ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনে উপনির্বাচনে ফলাফল বাতিল ও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার ও রবিবার দুই দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এবং রবিবার সারাদেশে জেলা সদরে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে।
আজ শুক্রবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, গতকাল একেকটা সেন্টারের সামনে ২/৩/৪/৫শ করে বাইরের থেকে লোকজন এনে দাঁড় করে রেখেছে, যেই যাচ্ছে তাকে বের করে দেয় মেরে। এখানে নির্বাচনের নরমাল যে পদ্ধতি এর কোনো কিছুর সুযোগ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন বলুন আর যারা দেশ চালাচ্ছে তারা রাখেনি। সবচেয়ে বড় কথা, পুলিশ এসব অপকর্মে সহযোগিতা করেছে। আওয়ামী লীগ নানা মিথ্যাচার করবে এই নির্বাচনকে জাস্টিফাই করার জন্য। কিন্তু কোনোভাবে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
রাজধানীতে বাস পোড়ানোর ঘটনা সরকারের এজেন্টদের অপকর্ম উল্লেখ করে এ ব্যাপারে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, যুব দলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুল রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনার নিন্দা জানান মির্জা ফখরুল। একই সঙ্গে গত রাত থেকে রাজধানীতে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশি তল্লাশি ও অনেককে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, কালকে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে এটা ন্যক্কারজনক ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা গণতান্ত্রিক পরিবেশকে সাহায্য করে না, ক্ষতিগ্রস্ত করে। সে বিষয়ে আমরা যতটুকু খবর পেয়েছি, একটি টিভি চ্যানেলেও খবর প্রকাশ হয়েছে যে, সরকারি দলের ছাত্রলীগের এক ছেলেকে গতকালের ঘটনায় গ্রেফতারও করা হয়েছে এবং সে বলেছে যে, তাকে পয়সা-টয়সা দিয়ে নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ খবরটি প্রকাশ হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে, যে উপনির্বাচনটা হলো এটা একেবারেই নির্বাচন বলা হয় নাই। এটা একটা পাতানো ও জালিয়াতি নির্বাচন হয়েছে সেটা থেকে জনগণের দৃষ্টিকে দূরে রাখার জন্য এই বাস পোড়ানোর ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে। এটা নিঃসন্দেহে সরকারের একটা পরিকল্পনা যে নির্বাচন প্রক্রিয়াটা ধবংস করা এবং দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা তারই নমুনা আমরা দেখতে পারছি।
ঢাকা-১৮ আসনে ধানের শীর্ষের প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান বলেন, গতকাল বিভিন্ন কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থী নিজে এবং তার প্রধান এজেন্ট আবদুস সালাম গেছেন সেখানে তারা দেখেছেন কেন্দ্রে ভোটারদের কোনো উপস্থিতি ছিল না। ভোটারদের বের করে দিয়ে তারা সন্ত্রাসীদের জড়ো করেছে। আমাদের প্রার্থীদের সেন্টারে ঢুকতে দেয়া হয়নি এটা আমরা মিডিয়াকে দেখেছি। এটা কোনো নির্বাচন হয়নি, এটা একটা তামাশার নির্বাচন হয়েছে। সরকার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের যৌথ প্রযোজনায় এই উপনির্বাচন ভোট ডাকাতির নির্বাচন হয়েছে, তামাশা হয়েছে। সরকারের ইচ্ছানুযায়ী তাদের প্রার্থীকে জিতানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের যা কিছু করা দরকার তারা সেটাই করেছে।
সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী সেলিম রেজার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির ভোটার কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছে তাকে ফিঙ্গার প্রিন্ট যেটা মেরে নিয়ে বলেছে যে, এবার আপনি চলে যান। অর্থাৎ বোটন চাপ দেবে নৌকা প্রতীকে, সেই ভোট চলে যাবে নৌকায়। এভাবে তারা ভোট ডাকাতি, ভোট ছিনতাই করেছে। এটা এবার নতুন স্টাইল চালু করেছে। এসব নির্বাচন থেকে আবার নতুন করে প্রমাণিত হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিকল্প নাই, ওইরকম সরকার ছাড়া নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না। আমি আশা করি, আগামীতে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নাই। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন।