১০-৫টা নয়, ১২-৮টা মার্কেট খোলা রাখার দাবি ব্যবসায়ীদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫১ এএম, ২৬ এপ্রিল,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৩৫ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে টানা ১১ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার থেকে আবার দোকান ও শপিংমল খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা এই সময়ে মার্কেট খুললে ক্রেতা পাওয়া যাবে না। এ জন্য তারা দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানাচ্ছেন। এ দাবির পক্ষের যুক্তি হিসেবে তারা বলছেন, রোজার মাসে মানুষ সকালে মার্কেটে আসে না। তাছাড়া অফিস চলছে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। অফিস শেষ করেই কোনো মানুষ মার্কেটে ছুটবে না। মার্কেটে কেনাকাটা করতে মানুষ আসবে বিকেল থেকে। তাই অন্তত রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট খোলা থাকলে ব্যবসায়ীরা কিছু বিক্রি করতে পারবেন।
ব্যবসায়ীরা আরও বলছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে গত বছর মার্কেট খোলা রাখা যায়নি। ব্যবসায়ীরা লোকসান গুনেছেন। এ বছর কিছুটা ভালো ব্যবসা হবে এমন আশায় নতুন করে বিনিয়োগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এবারও করোনার প্রকোপ তাদের সেই আশায় বাঁধ সেধেছে। ঈদের আগে মার্কেট খোলার সময় না বাড়ালে ব্যবসায়ীরা আবারও বড় লোকসানের মধ্যে পড়বেন। শান্তিনগর টুইন টাওয়ার মার্কেটের একটি দোকানের ম্যানেজার জীবন বলেন, গত বছর রোজার ঈদে আমরা বড় লোকসান গুনেছি। এ বছর ভালো ব্যবসা হবে আশায় ঈদকেন্দ্রিক বাড়তি বিনিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু মার্কেট বন্ধ অবস্থায় ১০ রোজা চলে গেছে। এখন মার্কেট খুললেও সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে সকাল ১০টা থেকে ৫টা। এ সময়ে কারা কেনাকাটা করতে মার্কেটে আসবে?
তিনি বলেন, এখন অফিস চলছে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। অফিস শেষ করেই কেউ নিশ্চয়ই মার্কেটে ছুটে আসবে না। তাছাড়া রোজার ভেতরে মানুষ মার্কেটে আসে বিকেলে। মানুষ যে সময় মার্কেটে আসবে, এখন তো সেই সময়ে মার্কেট বন্ধ হয়ে যাবে। অন্তত রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট খোলা থাকলে কিছু বিক্রি করতে পারবো। তা না হলে ক্রেতার অভাবে এবার বড় লোকসান গুনতে হবে। বেইলি রোডের নাভানা টাওয়ারে জুয়েলারি ব্যবসায়ী মেহেদী বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা এই নিয়মে মার্কেট খোলা থাকলে এবার ক্রেতা কম পাওয়া যাবে। বাস্তবতা হলো, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মার্কেটে ক্রেতা আসে না। তাই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার পরিবর্তে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট খোলার অনুমতি দিলে ব্যবসায়ীরা কিছু বিক্রি করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ১০ রোজা চলে গেছে। ঈদের খুব বেশি বাকি নেই। সুতরাং এবারের ঈদে ব্যবসায়ীদের পক্ষে লাভ করা কঠিন হবে। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী গত বছরের মতো এবারও লোকসানের মধ্যে পড়বেন। তাই ব্যবসায়ীদের লোকসান যাতে কিছুটা কম হয়, সে জন্য রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট খোলা রাখা যেতে পারে।
ফরচুন শপিংমলের ব্যবসায়ী মো. লিটন বলেন, করোনার কারণে গত বছর ব্যবসা করতে পারিনি। গত বছরের রোজার ঈদে এক লাখ টাকার মতো বিক্রি হয়েছিল। অথচ আমার দোকানের পিছনেই খরচ আছে মাসে এক লাখ টাকা।
তিনি বলেন, গত বছর মানুষ কম কেনাকাটা করেছে, তাই ধরে নিয়েছিলাম এবার বিক্রি ভালো হবে। এ জন্য ঋণ করে দোকানে নতুন করে মাল তুলেছি। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি মনে হচ্ছে গতবারের থেকে খারাপ হবে।
তিনি আরও বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মার্কেট খোলা থাকলে ক্রেতা পাওয়া যাবে না। কারণ রোজার ভেতরে ক্রেতারা মার্কেটেই আসবে ৫টার দিকে। তাছাড়া সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতা পাওয়া যাবে না। তাই সকাল ১০টার পরিবর্তে দুপুর ১২টা থেকে মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। আর মার্কেট বন্ধ হবে রাত ৮টায়। এটা করা হলে আমরা লোকসান কিছুটা হলেও কমিয়ে আনতে পারবো। খিলগাঁও তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেটের ব্যবসায়ী হাসান বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা এই নিয়মে মার্কেট খুললে ছুটির দিন ছাড়া ক্রেতা পাওয়া যাবে না। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের রুটি-রুজির চিন্তা করে যেহেতু মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তাই ৫টার পরিবর্তে রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট খোলার সুযোগ দেয়া উচিত।